ফাইল ছবি।
নব্যেন্দু হাজরা: যানজট নেই, সময়ও লাগে কম। সঙ্গে ভ্যাপসা গরমে খাওয়া যায় এসি-র হাওয়া। দ্রুত পৌঁছে যাওয়া যায় শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণে। তাই ঠাকুর দেখতে সবসময়ই শহরবাসীর প্রথম পছন্দ কলকাতার লাইফলাইন। ফলও যা হওয়ার তা-ই! মহালয়ার পর থেকেই ঠাসাঠাসি ভিড়ে পা রাখা দায় পাতালপথে। যাত্রীচাপে তো অনেক স্টেশনে মেট্রোর দরজাও বন্ধ হতে চাইছে না। মেট্রোয় উঠেও এসি-র মালুম পাচ্ছেন না যাত্রীরা। বিশেষত পুরনো রেকগুলোয়। একেবারে ঘেমেনেয়ে একসা অবস্থা। গরমে পুজোর মেক-আপ গলে জল অষ্টাদশী তন্বী থেকে পাশের পাড়ার কাকিমার।
স্বাভাবিকভাবেই তাই মেট্রো কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটছে যাত্রীদের। তাঁদের বক্তব্য, পুরনো রেকেই এই বিপত্তি। মানে আইসিএফের যে ‘ভেল’ রেক রয়েছে, সেগুলোতে এই সমস্যা। তবে নতুন মেধা রেকে ঠান্ডা হচ্ছে যথেষ্টই। যাত্রীরা জানাচ্ছেন, মেধা রেকের এসির ব্লোয়ার দিয়ে হু হু করে হাওয়া বেরোয়। কারণ ব্লোয়ারের মুখ পুরো খোলা। ভিড়ে ঠাসাঠাসি কামরা হলেও ঠান্ডা হাওয়াই পাওয়া যায়। কিন্তু পুরনো মেট্রোগুলোয় ভিড় বাড়লে দমবন্ধ করা পরিস্থিতি হচ্ছে। মেট্রো কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, প্রত্যেকটি কামরার একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক যাত্রী বহনের ক্ষমতা রয়েছে। এসিগুলোও একটা নির্দিষ্ট ক্ষমতাসম্পন্ন। সেখানে যাত্রীসংখ্যা যদি অনেক বেশি হয়ে যায়, তা হলে স্বাভাবিক নিয়মেই কামরা গরম হয়ে যাবে। তা ছাড়া নতুন রেকগুলোর এসি অনেক বেশি উচ্চ ক্ষমতাবিশিষ্ট।
মেট্রোর আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, পুরনো এসি রেকের তাপমাত্রা সাধারণত ২৩-২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করে। তার নিচে নামে না। কিন্তু মেধা রেকের এসি ২০ ডিগ্রির নিচেও নামে। এবং পুরোটাই অটোমেটিক। কামরা খুব ঠান্ডা হয়ে গেলে অটোকাট হয়ে যায়। তাপমাত্রা বাড়লে তা চলতে শুরু করে। এর পাশাপাশি পুরনো রেকের এসিগুলো দীর্ঘদিন ধরে চলার ফলে দুর্বল হয়ে গিয়েছে। আর সেকারণেই ভুগতে হচ্ছে যাত্রীদের। মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, ‘‘আমাদেরও বিষয়টি নজরে এসেছে। দ্রুত সমস্যাটা ঠিক করা হবে।’’
শুক্রবার রাতেও শহরের লাইফলাইনে ছিল উপচে পড়া ভিড়। যাত্রীরা যাতে ঠিকভাবে ওঠানামা করতে পারেন, সেকারণে প্রত্যেক স্টেশনে মেট্রোর দরজা একটু বেশি সময় খোলা থেকেছে। কালীঘাট, টালিগঞ্জ, যতীন দাস পার্ক, দমদম, এসপ্ল্যানেডের মতো স্টেশনগুলোতে এদিনও থিকথিক করেছে যাত্রী। মেট্রো নিরাপত্তায় কর্তৃপক্ষের তরফে একাধিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। পুজোর দিনগুলিতে ব্লু লাইন এবং গ্রিন লাইনের বিভিন্ন মেট্রো স্টেশনে ১০০ জনেরও বেশি অতিরিক্ত কর্মী মোতায়েন করা রয়েছে। যে কোনও জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় কুইক রেসপন্স টিম এবং ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিম বিভিন্ন স্টেশন ও ট্রেনে মোতায়েন রয়েছে। তাছাড়াও মহিলা এবং শিশুদের নিরাপত্তায় মহিলা আরপিএফ ট্রেন এবং স্টেশনগুলিতে মোতায়েন করা রয়েছে। এমনকী রয়েছে ডগ স্কোয়াডও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.