রূপায়ন গঙ্গোপাধ্যায়: ইসলামপুরের ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ ছাত্র সংগঠন এবিভিপি৷ ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানানোর পাশাপাশি পুলিশ আধিকারিক ও মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে তদন্ত চাওয়া হয়েছে৷ এই ঘটনার পেছনে অন্য বাকি অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে সিবিআই তদন্ত হোক বলেও এদিন দাবি জানানো হয়েছে৷
মঙ্গলবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে এবিভিপি-র সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক আশিস চৌহান ও রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সপ্তর্ষি সর্দার কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের কথা জানান। মৃত দুই ছাত্রের পরিবার ও আহতদেরকেও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিও তোলে এবিভিপি৷ বুধবার বিজেপির ডাকা ১২ ঘণ্টার বাংলা বনধে নৈতিক সমর্থন রয়েছে বলেও এবিভিপির তরফে জানানো হয়৷ তবে, সমর্থন থাকলেও এবিভিপি পথে নামবে না বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়৷ কিন্তু, সমর্থন জানিয়েও কেন পথে নামবে না এবিভিপি? তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন৷ কেননা, গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরে এবিভিপির দুই কর্মীর মৃত্যুর প্রতিবাদে যখন বনধ ডেকেছে বিজেপি, তখন একই মতাদর্শে ছাত্ররাজনীতি করা ছাত্র সংগঠনের বনধের সমর্থনে মাঠে না নামার কৌশল ঘিরেও দলের অন্দরেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে৷
[শহরে ডেঙ্গুর বলি আরও এক, নার্সিংহোমে মৃত্যু যুবকের]
অন্যদিকে, বনধের সমর্থনে এবিভিপির মিছিলকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় ধর্মতলা চত্বরে। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি এবিভিপি সমর্থকদের৷ রাস্তা অবরোধ করে পথচলতি সাধারণ মানুষকে বিপাকে ফেলে এই এই ছাত্র সংগঠন৷ পথ অবরোধ করে কয়েকটি বাসের দিকে ইট ছোঁড়ে এবিভিপির কর্মীরা৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে৷ শহরের রাজপথে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগে এবিভিপির ১২ সমর্থককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ ইসলামপুরের ঘটনার প্রতিবাদে উত্তর কলকাতা থেকে এবিভিপি-র মিছিলটিকে কেন্দ্র করে ধর্মতলা চত্বরে যানজট তৈরি হয়৷ অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ধর্মতলা চত্বর৷
বনধের আগে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের হওয়ার বেশ বিপাকে বিজেপি নেতৃত্ব৷ কেননা, ইসলামপুর কাণ্ডে বিজেপির ডাকা ১২ ঘণ্টার বনধকে বেআইনি ঘোষণার দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টে দায়ের হয়েছে জনস্বার্থ মামলা৷ উচ্চ আদালতে তৃণমূল সাংসদ ইদ্রিশ আলি মামলা দায়ের করেন৷ আজ, হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির এজলাসে এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা৷ আদালত সূত্রে খবর, যেহেতু দেশের শীর্ষ আদালত ও হাই কোর্ট বনধকে বেআইনি বলে আগেই ঘোষণা করেছে, ফলে বিজেপির ডাকা এই বনধকেও ‘কালো তালিকাভুক্ত’ করার দাবি জানান সাংসদ৷
[পুজোর টিজার নিয়ে বিতর্কে সন্তোষপুর লেকপল্লি, মণ্ডপ জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি]
যদিও, বনধ রুখতে রাজ্য সরকারের তরফে একগুচ্ছে বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে৷ বনধের দিনে কাজে না আসা কর্মীদের বেতন ও কর্মজীবন থেকে একদিন বাদ দেওয়ার বিষয়েও বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে৷ পুলিশের তরফেও একগুচ্ছ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে৷ বনধের দিনে বাংলার সচল রাখতে শাসকদল তৃণমূলের তরফেও পথে নামা হবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ ইউরোপ সফরে গিয়ে বনধের বিরোধী বার্তাও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ প্রশাসন ও দলীয় স্তরে বনধ বিরোধী অবস্থান স্পষ্ট হওয়ার পর তৃণমূলের তরফে এবার আইনি পথে লড়াইয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে খবর৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.