কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: প্রায় তিন বছর পর প্রকাশ্যে বহিষ্কৃত, প্রতাপশালী মোর্চা নেতা বিমল গুরুং (Bimal Gurung)। আজ বিকেলে সল্টলেকের গোর্খাভবনের সামনে দেখা গেল তাঁকে। পাহাড়ে অশান্তি পরিবেশ তৈরি এবং রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে UAPA ধারায় মামলা চলছে। ফেরার ছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা থেকে বহিষ্কৃত হওয়া সভাপতি বিমল গুরুং। শোনা যাচ্ছিল, তিনি নেপালের আশ্রয়ে রয়েছেন। এই অবস্থায় প্রকাশ্যে এলে গ্রেপ্তার হতে পারেন, এমন আশঙ্কা ছিলই। তা সত্ত্বেও কীভাবে অনায়াসে তিনি কলকাতায় এলেন, তা নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।
বুধবার বিকেল নাগাদ সল্টলেকের গোর্খা ভবনের সামনে গাড়ি নিয়ে হাজির হন মোর্চার প্রাক্তন নেতা বিমল গুরুং। তবে ভবনটি GTA’র অধীনস্ত হওয়ায় তাঁকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। অনুমতি পাওয়ার জন্য প্রায় আধঘণ্টা অপেক্ষা করেন গুরুং। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গোর্খা ভবনে প্রবেশের অনুমতি না পেয়ে ফিরে যান। কোথা থেকে তিনি এলেন, কোথায়ই বা ফিরে গেলেন – এসব নিয়ে ধোঁয়াশা। সেইসঙ্গে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। ফেরার গুরুংয়ের বিরুদ্ধে UAPAমামলা চলায় আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল। এখন তিনি প্রকাশ্যে এলেও গ্রেপ্তার হলেন না কেন, রয়েছে সেই ধোঁয়াশাও।
বছর তিন আগে দার্জিলিংয়ের ভানুভবনে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠক চলাকালীন হামলা চালানো ও পরবর্তী সময়ে পাহাড়ে চূড়ান্ত অস্থির পরিস্থিতি তৈরি করার নেপথ্য নায়ক হিসেবে রাতারাতিই কুখ্যাত হয়ে ওঠেন বিমল গুরুং। অথচ ক্ষমতায় আসার পর গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সঙ্গে আলোচনাক্রমে তাঁকে সামনে রেখেই পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে এনেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। ভানুভবনের হামলার পর থেকে পাহাড়বাসীর কাছে কার্যত ভিলেন হয়ে দাঁড়িয়েছিল গুরুং। যদিও একাংশ তাঁর সমর্থনেই ছিল। রাজ্য সরকারের নির্দেশে তাঁকে ধরার জন্য বিশেষ অপারেশন চালায় পুলিশ। রাতে তাঁর ডেরায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তারির সময়ে সংঘর্ষে মৃত্যু হয় তরুণ পুলিশ অফিসার অমিতাভ মালিকের। পুলিশের হাত ফসকে পালিয়ে যান বিমল গুরুং।
তারপর থেকেই তাঁকে দাগী আসামি হিসেবে চিহ্নিত করে রাজ্য সরকার কড়া ব্যবস্থা নেয়। রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে UAPA ধারায় মামলা দায়ের হয়। যদিও অজ্ঞাতবাসে থেকেও পাহাড়ে মাঝেমধ্যেই নানারকম উসকানিমূলক কাজ চালানোর চেষ্টার ত্রুটি করেননি গুরুং। ইতিমধ্যে GTA’তেও অনেক বদল এসেছে। গুরুংয়ের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন তাঁর একদা সহকারী বিনয় তামাং। আর গুরুংয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। কিন্তু তারপরও তিনবছর পর তিনি কীভাবে প্রকাশ্যে কলকাতায় এলেন এবং ফিরে গেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.