সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বচ্ছ ভাবমূর্তি আর তুখোড় জনসংযোগ – এই দুটোই সবচেয়ে বড় অস্ত্র। তাই এগুলো ছাড়া পুরভোটে লড়ার সুযোগ মিলবে না। আজ তৃণমূল ভবনে দলের নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোরকে সামনে রেখে কাউন্সিলরদের সাফ জানিয়ে দিলেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু এটুকুই নয়, আসন্ন পুরসভা ভোটের আগে পিকে ‘স্যর’-এর ক্লাসে আরও কড়া কড়া বার্তা দিয়েছেন অভিষেক। রিগিং বা ভোট লুটের মতো বিষয়ের সঙ্গে কোনওভাবেই জড়ানো যাবে না বলে সমস্ত কাউন্সিলরকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে ‘স্যর’ পিকের আরও পরামর্শ, ‘দিদি’র ভাবমূর্তি জনতার কাছে খুবই স্বচ্ছ। তাই তাঁর ভাবমূর্তির কথা মাথায় রেখেই প্রয়োজনে জনগণের কাছে গিয়ে ক্ষমা চান।
প্রশান্ত কিশোরকে নির্বাচন কৌশলী হিসেবে দলের অংশ করে নেওয়ার পর থেকেই রাজ্যের শাসকদলের অন্দরে বেশ পরিবর্তন ধরা পড়েছে। দলে শৃঙ্খলা ফিরেছে অনেকটাই। নিজেদের কাজে আরও মনোযোগী হতে বাধ্য হয়েছেন জনপ্রতিনিধি থেকে কর্মী, নেতা সকলেই। আর এই শৃঙ্খলায় ভর করেই আগামী দিনে এগিয়ে যেতে চাইছে রাজ্যের শাসকদল। এখন পিকে’র পরিকল্পনা, পরামর্শেই বাঁধা পড়ে গিয়েছে দলের ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর কর্মসূচি, রণকৌশল। সেই জায়গায় দাঁড়িয়েই কাউন্সিলরদের কাছে নতুন নির্দেশ, পুরনির্বাচনে জনগণকে ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দিতেই হবে। লুটের কথা যেন দূরতম ভাবনাতেও না আসে।
মঙ্গলবার তৃণমূল ভবনে কাউন্সিলরদের নিয়ে ‘ক্লাস’ নিতে বসেছিলেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি, যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রশান্ত কিশোর। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তলব পেয়ে সকলেই একে একে হাজির হন কাউন্সিলররা। বড়দের সাক্ষী রেখেই তাঁদের কড়া বার্তা দিলেন যুবনেতা অভিষেক। বললেন, “ভোটে গায়ের জোর দেখাবেন না কেউ। লুট করা ভোটে জয় পাবেন বলে ভুলেও ভাববেন না। কাজের ভিত্তিতে জিততে হবে সবাইকে। এখনই ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে নেমে পড়ুন। জনসংযোগ বাড়িয়ে তুলুন।” সুব্রত বক্সিরা এমনও জানিয়ে দিয়ছেন যে দলের নির্দেশই শেষ কথা। তা অমান্য করলে, দলে তাঁর অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়বে। অভিষেকেরও স্পষ্ট সতর্কবার্তা, দলে থেকে কোনওরকম ‘নাশকতা’ চলবে না।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের বক্তব্য, ২০১৮র পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যের শাসকদলের কর্মী, সদস্যদের ভোট লুটের ছবিটা একেবারে প্রকাশ্যে চলে এসেছে। যার প্রভাব পড়েছে ২০১৯এর লোকসভা ভোটে। তৃণমূলের আশানুরূপ ফলাফল না হওয়ার পর্যালোচনা করে এই ফ্যাক্টরটিকেও দায়ী করেছেন পিকে। আর সেই জায়গায় দাঁড়িয়েই তাঁর মত, সাধারণ মানুষ ‘দিদি’কে অত্যন্ত শ্রদ্ধার চোখে দেখেন। তাই তাঁর দলের সদস্যরা এমন কোনও কাজে জড়িত থাকবেন না, যা তাঁর ভাবমূর্তিকেই সংশয়ের মুখে দাঁড় করায়। পুরনির্বাচনে টিকিট পেতে এবং জিতে দেখাতে এখন পিকে’র মন্ত্র অক্ষরে অক্ষরে পালন করা ছাড়া আর কার্যত কোনও উপায় নেই দলের কাউন্সিলরদের কাছে, এমনই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.