কৃষ্ণকুমার দাস: দলের কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে সুপারি কিলার পাঠিয়ে গুলি করে খুনের চেষ্টার ঘটনা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য বুধবার জেনে নিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। নিজের দপ্তরে কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলে হামলার নেপথ্যের ইস্যু থেকে শুরু করে বাইপাসের দুপাশের অঞ্চল নিয়ে বামজমানা ও বর্তমান রাজনৈতিক সমীকরণের যাবতীয় খুঁটিনাটির খবরও নেন তিনি। একইসঙ্গে সুশান্তর পাশে দল যে আছে তা নিয়েও আশ্বাস দিয়েছেন অভিষেক। তবে বৈঠক নিয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে কোনও কথা জানাতে অস্বীকার করেছেন কাউন্সিলর।
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও হামলার পরদিন সুশান্তকে ফোন করে রাজ্য সরকার ও দল পাশে আছে বলে অভয় দিয়েছিলেন। বুধবার বিকেলে কলকাতা পুরসভায় এসে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে দেখা করে হামলার ঘটনা ও পরবর্তী প্রশাসনিক পদক্ষেপ নিয়েও কথা বলেন বরো চেয়ারম্যান সুশান্ত ঘোষ। পরে কাউন্সিলর জানান, “আমার ওয়ার্ডের কিছু সমস্যা নিয়ে মেয়রকে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছি। উনি দ্রুত সমাধান ও পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন।” ফিরহাদের সঙ্গে দেখা করে অভিষেকের ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে পৌঁছে যান সুশান্ত।
এদিকে গোয়েন্দা তদন্তে জানা গিয়েছে, কাউন্সিলরকে খুনের পরই রাজ্য ছাড়ার পরিকল্পনা ছিল গুলজারদের। সেজন্য আগেই ফ্ল্যাট থেকে আসবাবপত্র সব সরিয়ে ফেলা হয়। হামলার দিন দুপুরে ফ্ল্যাট ছেড়ে বাচ্চাকে নিয়ে স্ত্রীও ট্যাক্সি করে বেরিয়ে যান। তল্লাশির জন্য মঙ্গলবার আফরোজ ওরফে গুলজারকে গুলশান কলোনির মার্টিন পাড়ায় তাঁর ফ্ল্যাটে নিয়ে যান গোয়েন্দারা। ফ্ল্যাটে ঢুকে তাজ্জব হয়ে যায় পুলিশ। ফ্ল্যাটে একটিও আসবাবপত্র নেই। কেউ যে ওই ফ্ল্যাটে বাস করত তার কোনও চিহ্নও নেই ফ্ল্যাটে। এতে স্পষ্ট যে খুনের পরই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। গুলজার পরিবারকে নিয়ে যে বিল্ডিংয়ে থাকত তার সামনে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। তার ফুটেজ দেখে পুলিশ জানতে পারে, শুক্রবার দুপুরে একটি ট্যাক্সি দাঁড়িয়ে ছিল বিল্ডিংয়ের সামনে। বাচ্চা নিয়ে তার স্ত্রী ওই ট্যাক্সিতে উঠে চলে যায়। আর ফিরে আসেনি। তার স্ত্রীর মোবাইল ফোনটিও সুইচড অফ রয়েছে।
তদন্তে পুলিশ আরও জেনেছে, যুবরাজ সিং যে স্কুটিতে এসে সুশান্তের উপর শুক্রবার সন্ধ্যায় হামলা করে ওই স্কুটি নিয়ে ওই দিন বিকেলেই গুলজার কসবায় কাউন্সিলরের বাড়ির সামনে ঘুরে যান। কাউন্সিলর যে সন্ধ্যায় ওখানে থাকবেন সেই তথ্যও নিয়ে যান। তারপরই যুবরাজকে পিস্তল দিয়ে ওই স্কুটি আরোহীর সঙ্গে পাঠিয়েছিল গুলজার। হামলার আগে সুশান্তর দৈনন্দিন রুটিন, কোথায় কখন যান, কখন বাড়ি ফেরেন সবই নখদর্পণে রেখেছিল গুলজার। কাউন্সিলরের আরও সমস্ত ঠিকানায়ও ‘রেইকি’ করে রেখেছিল বলে গোয়েন্দা জেরায় গুলজার স্বীকার করেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.