দীপঙ্কর মণ্ডল: বাবা ছিলেন রেলের হকার। বাড়িতে তিন বোন এক ভাই ও মা। গত বছর উচ্চমাধ্যমিকে তুখড় রেজাল্ট করেন নিতু সাউ। তাঁর বাড়ি নোয়াপাড়া থানা এলাকার শ্যামনগরে। মেধাবী মেয়েটি গত বছর রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ কলেজে ভূগোল অনার্সে ভরতি হন। অভাবি পরিবারে পড়াশুনোটুকু চলছিল। হঠাৎ ছন্দপতন। মারা গেলেন বাবা। অথৈ জলে পরিবার। পাড়ার প্রায় প্রত্যেককে নিতু বলতেন, “আমি পড়তে চাই। আমি বিয়ে করতে চাই না।” কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। কলেজ ছাড়তে হয়েছিল নিতুকে। খবর পান তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি মেয়েটির পাশে দাঁড়ালেন।
শনিবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যের মাধ্যমে বই, খাতা, ফুল এবং মিষ্টি পাঠালেন অভিষেক। নোয়াপাড়া থানার পাশেই নিতুর বাড়ি। এদিন বিকেলে তৃণাঙ্কুর নিতুদের বাড়িতে যান। ছিলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা নেতা অভিজিৎ দত্ত এবং সুব্রত দাস। তাঁদের মাধ্যমে অভিষেক নিতুর পরিবারকে জানালেন, “কোনওভাবেই পড়াশোনা বন্ধ করা যাবে না। শুধু কলেজ নয়, পিএইচডি পর্যন্ত তোমার পড়াশোনার দায়িত্ব আমার। তুমি যতদিন চাইবে ততদিন পড়তে পারবে।” এভাবেই মানবিকতার অনন্য নজির তৈরি করলেন যুব তৃণমূল সভাপতি। এই প্রথম নয়। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় যখনই যে বিপদে পড়ে তার পাশে দাঁড়ান অভিষেক। নীরবে।
কীভাবে এমন মেধাবী দুঃস্থদের খবর পান অভিষেক? তৃণাঙ্কুর জানালেন, “অভিষেকদা চূড়ান্ত ব্যস্ততার মাঝেও সব জেলার খবর রাখেন। সোশ্যাল নেটওয়ার্কে চোখ বোলান। তৃণমূলের সমস্ত শাখা সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। কেউ কোনও বিপদে পড়লেই ঝাঁপিয়ে পড়েন। সাধ্যমতো সাহায্য করেন।” প্রসঙ্গত, এর আগেও প্রচুর ছাত্রছাত্রীকে সাহায্য করেছেন তৃণমূলের এই যুব নেতা। হাসপাতালে গিয়ে কেউ বিপদে পড়লেও ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। এদিন নোয়াপাড়ায় নিতুর মুখে স্বর্গীয় আলো। তিনি বারবার হাত জোড় করে প্রণাম জানালেন সাংসদ তথা তৃণমূল যুব সভাপতিকে। বললেন, “উনি পাশে না দাঁড়ালে আমার পড়া বন্ধ হয়ে যেত। আবার কলেজ যেতে পারব। আমি আরও পড়তে চাই।” নিতুর এক বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বাড়িতে বাবা নেই। মা অসুস্থ। তিনি জানালেন, “অভাবের সংসার ঠিকমতো চলে না। তাই মেয়ের কলেজ বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। অভিষেক আমাদের কাছে দেবদূতের মতো নেমে এলেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.