সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “ভেবেছিলাম কোনও প্রবীণ অর্থনীতিবিদ পাবেন। পয়ষট্টি বা সত্তরের পরই তো সাধারণত পান। আটান্নতে পাব ভাবিনি। তবে স্বীকৃতি পাওয়া নিয়ে কোনও সংশয় ছিল না। একদিন পাবই, বিশ্বাস ছিল। তবে এত তাড়াতাড়ি পাব, সত্যিই ভাবিনি।” ফোনের ওপার থেকে আপ্লুত কণ্ঠে এভাবেই নোবেল জয়ের আনন্দ প্রকাশ করলেন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়।
বালিগঞ্জের বাড়ি থেকে এখন কয়েক হাজার মাইল দূরে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সেখানে বসেও কলকাতা, তাঁর বাড়ি, তাঁর বেড়ে ওঠার জায়গাগুলোকে আজও মিস করেন তিনি। জানান, তাঁর গবেষণার একটা বড় অংশ রয়েছে বীরভূমকে ঘিরে। সেখানে দারিদ্র দূরীকরণ নিয়ে নানা কাজ করেছিলেন। গবেষণায় দারিদ্রের নয়া সংজ্ঞা খুঁজে বের করেছেন। তাঁর কথায়, “দারিদ্রকে শুধু ক্রয়ক্ষমতার আলোয় বেঁধে রাখার চেষ্টা করিনি। বরং বলা চেষ্টা করেছি, দারিদ্র মানে কোনও একটা সমস্যা নয়। অনেকগুলো সমস্যার সমাহার। ভুল ডাক্তারের কাছে যাওয়াটাও দারিদ্র। তথ্য কম থাকাটাও দারিদ্র।”
দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন তিনি। বলেন, সরকারও বুঝতে পারছে অর্থনীতির হাল ভাল নয়। গত কয়েক বছরের থেকে বর্তমান পরিস্থিতি অনেকটাই খারাপ। যা বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলির সামনে একটা বড় সংকট। মুদ্রাস্ফীতি কমানোর চেষ্টা করতে হবে।
অর্থনীতিতে অমর্ত্য সেনের পর দ্বিতীয় বাঙালি হিসেবে নোবেল জিতে দেশকে গর্বিত করেছেন অভিজিৎ। খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই শুভেচ্ছার বন্যায় ভাসছেন বালিগঞ্জের অর্থনীতিবিদ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়- প্রত্যেকেই এই বিরাট সাফল্যের জন্য তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ছাত্রের নোবেল জয়ের আনন্দে ভাসছে তাঁর স্কুল সাউথ পয়েন্ট থেকে প্রেসিডেন্সি কলেজ। ১৯৭৮-৮১ শিক্ষাবর্ষে প্রেসিডেন্সি থেকেই অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন তিনি। প্রেসিডেন্সি আলমনি অ্যাসোসিয়েশনের সচিব বিভাস চৌধুরি বলছেন, “অমর্ত্য সেনও প্রেসিডেন্সির ছাত্র ছিলেন। অভিজিতও এই কলেজে (বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়) পড়েছেন। আমরা অত্যন্ত গর্বিত। তাঁকে ও তার স্ত্রীকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।”
Congratulations to Abhijit Banerjee on being conferred the 2019 Sveriges Riksbank Prize in Economic Sciences in Memory of Alfred Nobel. He has made notable contributions in the field of poverty alleviation.
— Narendra Modi (@narendramodi) October 14, 2019
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কথায়, “আমাদের জন্য খুব গর্বের মুহূর্ত। অর্থনীতি বিভাগকে ওঁ সবসময় মূল্যবান পরামর্শ দিয়েছেন। মেন্টর গ্রুপের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। কলকাতায় এলেই প্রেসিডেন্সি ক্যাম্পাসে আসেন। তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।” উচ্ছ্বসিত সাউথ পয়েন্টও। পুজোর ছুটি শেষ হলে স্কুলের তরফে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে একটি ই-মেল করা হবে। ২২ অক্টোবর কলকাতা আসতে পারেন বলে জানিয়েছেন অভিজিৎ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.