কৃষ্ণকুমার দাস: ভুয়ো ঠিকানা দিয়ে করোনা পরীক্ষা (Covid Test) করানো রোগীরাই শহরে কোভিড সংক্রমণ বৃদ্ধিতে অন্যতম মাধ্যম হচ্ছেন। যে ঠিকানা দিয়ে অ্যান্টিজেন বা আরটিপিসিআর পরীক্ষা করাচ্ছেন এবং হোম আইসোলেশনে থাকছেন বলে সরকারি তথ্যে উল্লেখ করছেন সেখানে অনেক রোগীকে পাওয়া যাচ্ছে না। কোভিড পজিটিভ হওয়ার পরে রোগীর বাড়ি বা ফ্ল্যাটে স্যানিটাইজ করতে গিয়েও উল্লেখিত ঠিকানায় পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ সেই রোগী তখন অন্যত্র থাকছেন ও সামাজিক ক্ষেত্রে বিস্তর মেলামেশা করে ভাইরাস ছড়িয়ে দিচ্ছেন। বস্তুত এই কারণে এবার কলকাতা পুরসভার সমস্ত করোনা পরীক্ষা সেন্টারেই আধার কার্ড বা ভোটার কার্ড বাধ্যতামূলক হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুরসভার অন্যতম প্রশাসক দেবব্রত মজুমদার। মহানগরে সংক্রমণ রুখতে উপসর্গহীন ব্যক্তিদের পুরসভার তরফে ‘ম্যান-মার্কিং’ চালু করতেই ভুয়ো ঠিকানার বিষয়টি ধরা পড়েছে বলে স্বাস্থ্যদপ্তরের দাবি।
সরকারি হাসপাতাল বা পুরসভার সেন্টারে আধার কার্ড বা ভোটার কার্ড (Voter Card) চাইলেও অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতালে শুধু নাম ঠিকানা নিয়েই করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, পুরসভা অ্যান্টিজেন টেস্ট করলে এক ঘণ্টার মধ্যে যেমন রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে তেমন পরদিনই সরকারি দপ্তরে পজিটিভ ব্যক্তির নাম ঠিকানা চলে যাচ্ছে। কিন্তু বেসরকারি ক্ষেত্রে পরীক্ষা করালে সেখান থেকে নাম আসতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তিন-চারদিন লেগে যাচ্ছে বলে সোমবার অভিযোগ করেন পুরসভার প্রশাসক দেবব্রত মজুমদার। তাঁর কথায়, “বেসরকারি হাসপাতাল থেকে আসা কিছু নাম ও ঠিকানা ভুয়ো বলে প্রমাণ হচ্ছে। থাকেন এক ঠিকানায়, টেস্টের সময় অন্য ঠিকানা দিয়েছেন, তাই স্যানিটাইজ করা অথবা আক্রান্ত ব্যক্তিকে ‘ম্যান-মার্কিং’ করা কঠিন হয়ে পড়ছে।”
অনেকে আবার করোনা ধরা পড়লেই নিজের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র সরে পড়ছেন। কিন্তু সেই ঠিকানা পুরসভা বা স্বাস্থ্যদপ্তর কাউকেই জানাচ্ছেন না। তাতে করোনায় সংক্রমিত ব্যক্তিকে নজরবন্দি করা বা চিকিৎসা পরিষেবারও আওতায় নিয়ে আসা খুব কঠিন হয়ে পড়ছে। যদিও পুরসভার তরফে প্রতিটি সংক্রমিত ব্যক্তির ঠিকানা ও আশেপাশের বাড়িতে রোগ ধরার পরেই জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে বলে দাবি করা হয়েছে। পাড়ার গলিতে গলিতে মিষ্ট ব্লোয়ার, ওয়ার্ডের ভিতরের বাজার বা জনপদে বড় গাড়ি থেকে স্যানিটাইজ করার পাশাপাশি রাজপথে প্রতিদিন ‘মিস্ট ক্যানন’-এ জীবাণুনাশক ছড়ানো হচ্ছে বলে পুরপ্রশাসক জানান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.