অভিরূপ দাস: ইছাপুরের কিশোরের পর জয়নগরের যুবক। ফের হাসপাতালের ‘গাফিলতির’ জেরে প্রাণ গেল করোনা (Corona Virus) উপসর্গযুক্ত যুবকের। সোমবার রাজ্যের অন্যতম কোভিড হাসপাতাল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের মেঝেতেই মৃত্যু হয় তাঁর। “কোনও রোগীকে ফেরানো যাবে না, প্রাথমিক চিকিৎসাটুকু দিতেই হবে,” বারবার এই নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। কিন্তু আদতে তা যে মানছে না হাসপাতাল, এদিনের ঘটনায় ফের তা প্রমাণিত।
জানা গিয়েছে, জুন মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই শরীরটা খারাপ অশোক নামে ওই যুবকের। বারবার বমি-পায়খানা হচ্ছিল। এরপর তাঁকে ভরতি করা হয় দক্ষিণ বারাসাতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে টাইফয়েডের চিকিৎসা চলছিল তাঁর। গতকাল থেকে শুরু হয় শ্বাসকষ্ট, সঙ্গে ছিল জ্বর। চিকিৎসকরা জানান, রোগীর কোভিডের উপসর্গ রয়েছে। অবিলম্বে কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। এরপর সোমবার ভোরে অ্যাম্বুল্যান্সে করে রোগীকে নিয়ে আসা হয় এসএসকেএম হাসপাতালের জরুরি বিভাগে।
সেখানে বলা হয়, আপাতত এসএসকেএমের ফিভার ক্লিনিকের আউটডোর চলছে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে। তড়িঘড়ি রোগীকে সেখানে নিয়ে যেতে বলা হয়। এদিকে ততক্ষণে নেতিয়ে পরেছে রোগী। দক্ষিণ বারাসাত থেকে এসএসকেএম, এই দীর্ঘ পথ অক্সিজেন বিহীন অ্যাম্বুল্যান্স করে আসার ধকল আর নিতে পারছিল না শরীর। শম্ভুনাথ পণ্ডিতের চিকিৎসকরা রোগীকে দেখে জানান, শারীরিক অবস্থা সংকটজনক অবিলম্বে একে ভরতি করতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে কোভিড হাসপাতাল মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয় তাঁকে। মেডিক্যাল কলেজে ফের একবার শারীরিক পরীক্ষা করে। এরপর ভরতির আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে বছর ২৬-অশোক।
অশোকের মৃত্যুর পর আরেক দফা ভোগান্তি শুরু পরিবারের। হাসপাতালের তরফে বলা হয়, করোনার উপসর্গ রয়েছে তাই দেহ পরিবারকে দেওয়া যাবে না। পরিবারের তরফে একাধিকবার টাইফয়েডের বিষয়টি জানালেও তা শুনতে নারাজ হাসপাতাল। সব মিলিয়ে নাজেহাল হতে হয় তাঁদের। এত লড়াই সত্ত্বেও সন্তানকে বাঁচাতে না পারার জন্য হাসপাতালকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন যুবকের মা। তাঁর কথায়, “এরা এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ছেলেটাকে মেরে দিল। এসএসকেএম-এই যদি অক্সিজেন দেওয়া হত আমার ছেলেটা বেঁচে যেত।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.