অর্ণব আইচ: কলকাতা শহরে বসে মার্কিন মুলুকে প্রতারণার ফাঁদ! ভিনদেশির নাগরিকদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা লুট! শেষপর্যন্ত প্রতারক যুবককে জালে তুললেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা। ধৃতের কাছ উদ্ধার হয়েছে প্রচুর হার্ড ডিস্ক, বিভিন্ন মার্কিন সংস্থার DID নম্বর। ওই যুবকের কাছ থেকে ঠিকানা, ফোন নম্বর-সহ মার্কিন নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা।
[চোখে IPS হওয়ার স্বপ্ন, বিয়ে রুখতে বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে থানায় গেল নাবালিকা]
জানা গিয়েছে, এদেশের একটি মার্কিন সংস্থার প্রতিনিধি হিসেব কাজ করেন কলকাতা বাসিন্দা আদর্শ চৌহান। দিন কয়েক আগে টালার যুবক অভিষেক গুপ্তের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তিনি। অভিযোগকারীর বক্তব্য, আয়কর দপ্তরের আধিকারিক সেজে তাঁর সংস্থার মার্কিন গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করছে অভিষেক। ইতিমধ্যেই প্রায় লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সে। আর কলকাতা বসেই গোটা অপারেশনটা চালাচ্ছে অভিষেক। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই মঙ্গলবার অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে কলকাতা পুলিশে গোয়েন্দা বিভাগ। ধৃতের কাছে প্রচুর হার্ডডিস্ক, বিভিন্ন মার্কিন সংস্থার DID নম্বর। মিলেছে মার্কিন নাগরিকদের ফোন নম্বর, ঠিকানা-সহ আরও নানা তথ্য।
[আইসক্রিম ক্রেটের ধাক্কা, রাজধানীতে যাত্রীর মারে মরণাপন্ন আইআরসিটিসি কর্মী]
জানা গিয়েছে, উত্তর কলকাতা টালার মন্মথনাথ গাঙ্গুলি রোডে থাকে বছরের চব্বিশের যুবক অভিষেক গুপ্তা। শহরের একটি নামী বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছে সে। নিজেকে একটি বেসরকারি সংস্থার ডিরেক্টর বলে পরিচয় দিত অভিষেক। তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই বেসরকারি সংস্থার অফিস কসবার রাজডাঙায়। গোয়েন্দাদের দাবি, বেশ কয়েকজন যুবককে সঙ্গে নিয়ে রীতিমতো একটি প্রতারণার চক্র তৈরি করেছিল ওই যুবক। তবে এদেশে নয়, এই প্রতারণা চক্রটি সক্রিয় ছিল সুদূর মার্কিন মুলুকে। কীভাবে? গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, যে মার্কিন সংস্থার হয়ে কাজ করেন অভিযোগকারী আদর্শ চৌহান, সেই সংস্থার সার্ভার হ্যাক করে গ্রাহকদের যাবতীয় তথ্য হাতিয়ে নিয়েছিল অভিষেক। প্রথমে নিজেকে মার্কিন আয়কর বিভাগের কর্তা পরিচয় দিয়ে ওই সংস্থার মার্কিন গ্রাহকদের একটি ভয়েস মেল পাঠাত অভিযুক্ত। বলা হত, তাঁদের বিপুল পরিমাণ কর বকেয়া রয়েছে। অবিলম্বে কর মিটিয়ে না দিলে, মোটা অঙ্কের টাকা জরিমানা করবে মার্কিন আয়কর দপ্তর। এমনকী, জেলও হতে পারে।
[কোটা থাকলেও রেলে প্রতিবন্ধী কর্মীদের নেই বিশেষ সুবিধা বা সম্মান]
আয়কর দপ্তরের এই ভয়েস মেলে ভয় পেয়ে যেতেন অনেকেই। নির্দিষ্ট নম্বরে ফোন করে বিষয়টি জানতে চাইতেন তাঁরা। আর এই সুযোগটাকে কাজ লাগাত অভিষেক ও তার শাগরেদরা। মার্কিন নাগরিকদের কর ফাঁকির হাত থেকে বাঁচতে একটি নির্দিষ্ট অনলাইন সংস্থা থেকে কেনা-কাটা করার পরামর্শ দেওয়া হত। এভাবে মার্কিন নাগরিকদের টাকা অভিযুক্তদের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার হয়ে যেত। কিন্তু, অচিরে গ্রাহকরা বুঝতে পারেন, তাঁরা প্রতারিত হয়েছেন। এরপরই তাঁরা যে সংস্থার গ্রাহক অর্থাৎ অভিযোগকারীর সংস্থাকে গোটা বিষয়টি জানান। কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অভিষেক গুপ্তের বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন সংস্থার এদেশের প্রতিনিধি আদর্শ চৌহান। তারপরই ফাঁস হয় এই প্রতারণা চক্র।
[ছাত্র কাউন্সিল বাতিলের দাবিতে যাদবপুরে উপচার্য, সহ উপাচার্যকে রাতভর ঘেরাও]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.