Advertisement
Advertisement

ভাঙতে শুরু করল জ্বলন্ত বাগরি, প্রবল আতঙ্কে স্থানীয়রা

'১৯৪০-এ তৈরি বাগরি কখনও সংস্কারের মুখ দেখেনি।'

A section of Bagri market collapses

ছবিতে জ্বলছে বাগরি, ছবি :পিন্টু প্রধান।

Published by: Shammi Ara Huda
  • Posted:September 18, 2018 9:00 am
  • Updated:September 18, 2018 9:01 am  

অর্ণব আইচ: তিনদিন পেরিয়েও জ্বলছে বাগরি মার্কেট। এর মধ্যেই আগুনের তাপে ভেঙে পড়ল জ্বলন্ত বাগরির একাংশ। ঘটনাস্থল মার্কেটের ডি-ব্লক। মঙ্গলবার ভোর রাত থেকেই ডি-ব্লকের বিভিন্ন দোকানে শুরু হয়ে ভাঙন। সিলিংয়ের চাঙড় খসে খসে পড়ছে। আগে শুধু আগুনের গ্রাসে ছিল ইতিহাস হতে চলা বাগরি মার্কেট। এবার ভাঙনের গ্রাসেও পড়ল বহুতলটি। তিনদিন ধরে টানা জ্বলতে থাকায় কংক্রিটের স্তরে ফাটল ধরেছে। যেকোনও মুহূর্তে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়তে পারে একাধিক মানুষের রুটিরুজির এই সংস্থান। দমকল বাহিনীকেও অনেক সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হচ্ছে।

উল্লেখ্য, এখনও ধোঁয়ায় ঢেকে গোটা বাগরি মার্কেট। আশপাশে গেলেই জ্বলছে চোখ সঙ্গে উপরি পাওনা কটূ গন্ধ। দূর থেকেও হলকা আসছে। তারমধ্যেই ‘কুলিং প্রসেস’ চালু রেখেছেন দমকল কর্মীরা। কিন্তু থেকে থেকেই  জ্বলে উঠছে শাটার বন্ধ দোকানগুলির মধ্যে থাকা ‘ফায়ার পকেট’ । এই আগুন নেভাতেই রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে দমকলকর্মীদের। বহুতলটি যে  রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়াই টিকেছিল, তা এবার নজরে আসছে।

Advertisement

[মেট্রোর দরজায় আটকে মহিলার ওড়না, বাঁচালেন জওয়ান]

১৯৪০-এ তৈরি বাগরি মার্কেট দফায় দফায় বহুতলে পরিণত হয়েছে। এদিকে নির্মাণকার্য চললেও মার্কেটের রক্ষণাবেক্ষণ ছিটেফোঁটাও হয়নি। তাই প্রায় ৬০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে নাগাড়ে আগুন জ্বলার পর এই বহুতল আবাসনের পরিকাঠামো কতটা টিকে থাকবে, তা নিয়ে সন্দিহান শহরের স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়াররা। তাঁদের দাবি, বাগরি মার্কেটে ভিতরের অবস্থা এখন অনেকটা ‘ফার্নেস’-এর মতো। দীর্ঘ সময় ধরে আগুন জ্বলায় আবাসনের দেওয়াল ও মেঝে প্রচণ্ডভাবে তেতে ফুলে উঠেছে। দেওয়াল ও ছাদের ভিতরে কংক্রিটের সঙ্গে লোহার বিমগুলি তাপে ফুলে ছোট হয়ে যেতে পারে। যে কোনও সময় ভেঙে পড়তে পারে বাগরি। উৎসস্থলে তাপমাত্রা অন্তত ১৭৮ ডিগ্রির কাছাকাছি। একটা জায়গায় দীর্ঘক্ষণ ধরে আগুন জ্বললে ও হাওয়া চলাচলের সুযোগ না থাকলে প্রচণ্ড তাপ বিকিরণ হতে থাকে। কিন্তু সেই তাপ বাইরে যেতে না পারলে দেওয়ালকেই ফাটিয়ে দেয়। ভেঙে বেরিয়ে আসে ভিতরের লোহার বিম। ধসে পড়তে পারে ছাদ। হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়তে পারে আবাসনের অন্যান্য অংশও।

এই প্রসঙ্গে পূর্ত দপ্তরের প্রাক্তন চিফ ইঞ্জিনিয়ার ননীগোপাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘যতদূর শুনেছি দীর্ঘদিন ধরে ওই বাড়ির কোনও রক্ষণাবেক্ষণ হত না। ফলে স্বাভাবিক নিয়মে দেওয়ালে ফাটল ধরেছিল।’ এখন প্রশ্ন উঠছে টানা ১০০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অগ্নিকাণ্ডের পরও কীভাবে টিকে ছিল নন্দরাম মার্কেট। এর উত্তরে পুরসভার এক স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার জানান,  নন্দরাম মার্কেট প্রয়োজন অনুযায়ী সংস্কার হয়েছিল। দ্বিতীয়ত,  কংক্রিটের দেওয়ালে লোহার বিম দিয়ে তৈরি হয়েছিল নন্দরাম মার্কেট। তাই অধিক তাপমাত্রায় দেওয়াল বা ছাদ ফুলে গেলেও বাইরে থেকে জল দিয়ে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল। তাই ওই বাড়িটিকে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু বাগরি মার্কেটের দেওয়াল ও ছাদ কীভাবে তৈরি হয়েছিল তা স্পষ্ট নয়। তাঁদের আশঙ্কা ইট, বালি, সিমেন্টের সঙ্গে লোহার বিম দিয়ে পিলার তৈরি করে আবাসনটি তৈরি হয়েছিল। তাই অত্যধিক তাপমাত্রার ফলে সোমবার বিকেল থেকেই আবাসনের বিভিন্ন দেওয়াল ফুলতে থাকে। খসে পড়তে থাকে দেওয়ালের পলেস্তারা, ছাদের চাঙড়। মঙ্গলবার সেই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহষ দিনের শেষে জ্বলতে থাকা বাগরি কতটা অবশিষ্ট থাকবে তা এখন বড় প্রশ্ন।

[বাগরিই কি বেশি ভয়াবহ? দুঃসহ স্মৃতি রোমন্থনে নন্দরামের মালিক]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement