অভিরূপ দাস: কোভিড উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন রোগী। এদিকে পিপিই (PPE Kit) পরেছিলেন না চিকিৎসক। শ্বাসকষ্টের রোগী অ্যাম্বুল্যান্সেই ছটফট করলেন টানা ৪০ মিনিট। রোগীর পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসক যখন আসেন ততক্ষণে নিস্তেজ হয়ে পড়েছে শরীর। এ ঘটনায় অভিযোগ জমা পড়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনে। যদিও বেসরকারি ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. অংশুমান রায় জানিয়েছেন, ৪০ মিনিট সময় লাগেনি আসতে। তবে পিপিই যে তিনি পরেছিলেন না একথা স্বীকার করে নিয়েছেন চিকিৎসক।
২০২০ সালের মে মাসের ঘটনা। পূর্ব কলকাতার বাসিন্দা এস.কে ভট্টাচার্য ডায়ালিসিস করতে যান সল্টলেকের (Salt Lake) কলম্বিয়া এশিয়া হাসপাতালে। তাঁর কন্যা দেবশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে বাবা ওই হাসপাতালে চিকিৎসা করেন। সেই সুবাদে অধিকাংশ নার্স স্টাফ বাবাকে চেনেন। ডায়ালিসিস করে বাড়ি ফিরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই প্রৌঢ়। শ্বাসকষ্ট হতে থাকে তাঁর। বাড়িতে অক্সিজেন স্যাচুরেশন মেপে দেখা যায় তলানিতে এসে ঠেকেছে। তৎক্ষণাৎ রোগীকে নিয়ে ফের কলম্বিয়া এশিয়া হাসপাতালে যাওয়া হয়। মৃতের পরিবারের দাবি, সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ হাসপাতালে পৌঁছলেও ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়নি। রোগীকে অপেক্ষা করতে বলা হয়। অ্যাম্বুল্যান্সেই শুয়ে ছিলে রোগী। টানা ৪৫ মিনিট পর চিকিৎসক এসে রোগীকে ভিতরে নিয়ে যান। ১০টা ৫৫ নাগাদ জানানো হয়, মারা গিয়েছেন রোগী।
অভিযোগ পাওয়ার পর সোমবার এই ঘটনার শুনানি হয় রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনে। কমিশনের জেরায় কলম্বিয়া এশিয়ার জেনারেল ম্যানেজার অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ঘটনার সময় আমি হাসপাতালে ছিলাম না। ঘটনার কথা বলতে পারব না।” যদিও সময় নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। হাসপাতালের দাবি, সাড়ে ন’টা নয় বরং আরও দশ মিনিট পরে হাসপাতালে এসেছিলেন রোগীর পরিবার। ওই সময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ডিউটিতে ছিলেন ডা. অংশুমান কর। তাঁর দাবি, “আমি পিপিই পরে ছিলাম না। রোগীর কোভিড (Covid-19) উপসর্গ ছিল। পিপিই পরতে একটু সময় লেগেছে।” এই ‘একটু সময়’ ঠিক কতটা তা নিয়েই তদন্ত শুরু করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন। খতিয়ে দেখা হচ্ছে হাসপাতালের সিসিটিভি। স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সমস্ত তথ্য প্রমাণ খতিয়ে দেখে আমরা রায় জানাব।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.