অর্ণব আইচ: অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করার জন্য টাকা চাওয়ার অভিযোগ উঠল এক পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে। বেহালার এক বাসিন্দা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন, তাঁর কাছ থেকে ৭৫ হাজার টাকা চেয়েছেন এক পুলিশ অফিসার। আদালতের নির্দেশে ওই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বেহালার ওই বাসিন্দা।
[ আরও পড়ুন: ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে একজোট পুরনো বাড়ির মালিকরা, ভোট যাবে নোটায়]
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত সাব ইন্সপেকটর এখন উত্তর কলকাতার একটি থানায় কর্মরত। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৮৪ ধারায় তোলাবাজির মামলা শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশের এক কর্তা জানান, এই বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। যদিও লালবাজারের পুলিশ আধিকারিকদের মতে, যিনি টাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ জানিয়েছেন, তাঁরও টাকা দেওয়া উচিত হয়নি। পুলিশের পালটা প্রশ্ন, ওই পুলিশ অফিসার যখন টাকা চেয়েছিলেন, তখন কেন লালবাজার বা পুলিশের পদস্থ কর্তাদের সেই তথ্য জানানো হয়নি? তাহলে পুলিশ কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নিত।পুলিশ জানিয়েছে, ২০১৭-র ফেব্রুয়ারি মাসে যাদবপুর থানায় একটি প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগ দায়ের করেন বেহালার বি এল সাহা রোডের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা দায়ের হয়। যাদবপুর থানার তদন্তকারী অফিসার ওই মামলার অভিযোগকারীকে কিছু নথিপত্র নিয়ে থানায় আসতে বলেন। অভিযোগকারীর অভিযোগ, সেগুলি খতিয়ে দেখে ওই পুলিশ অফিসার তাঁদের জানান, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে গেলে তাঁকে ৭৫ হাজার টাকা দিতে হবে।
অভিযোগকারীর পক্ষ থেকে বলা হয়, তাঁদের অত টাকা দেওয়ার ক্ষমতা নেই। আদালতের কাছে অভিযোগকারী অভিযোগ জানান, ওই পুলিশ অফিসার তাঁদের বলেন, যতক্ষণ না তিনি ওই ৭৫ হাজার টাকা হাতে পাচ্ছেন, ততক্ষণ অভিযুক্তরা গ্রেপ্তার হবেই না। এমনকী, তাদের নামও চার্জশিটে উল্লেখ করা থাকবে না। তাঁরা কী করবেন, পুলিশ অফিসার তা তাঁদের উপরই ছেড়ে দেন। কিন্তু অভিযোগকারীর অভিযোগ, তাঁদের উপর চাপ সৃষ্টি করা হয়। ফলে তাঁদের কিছু করার ছিল না। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে যাদবপুর থানায় গিয়েই ওই অফিসারের হাতে তাঁরা ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে আসেন। কিন্তু টাকা নেওয়ার পরও প্রতারণার মামলার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অথচ থানায় গিয়ে ওই পুলিশ অফিসারের সঙ্গে তাঁরা দেখাও করেন। শেষ পর্যন্ত ওই অফিসার তাঁদের ফোনও ধরছেন না বলে অভিযোগ।
[ আরও পড়ুন: ভোটের পর বন্ধুত্বে আপত্তি নেই, তৃণমূলের জন্য দরজা খোলা রাখল কংগ্রেস ]
সম্প্রতি তাঁরা জানতে পারেন যে, যাদবপুর থেকে উত্তর কলকাতার একটি থানায় বদলি হয়েছেন ওই অফিসার। এরপরই প্রথমে তাঁরা পুলিশের কর্তাদের বিষয়টি জানান। তারপর আলিপুর আদালতে অভিযোগ জানিয়ে আবেদন করেন। আদালতের নির্দেশে যাদবপুর থানার পুলিশ তাদের প্রাক্তন অফিসারের বিরুদ্ধেই অভিযোগ দায়ের করে। পুরো ঘটনাটির তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.