স্টাফ রিপোর্টার, হাওড়া: নিজ ভূমেই পরবাস। নিজের রাজ্যেই পোশাক পরে বাধার সম্মুখীন হলেন এক ব্যবসায়ী। লুঙ্গির মতো করে ধুতি পরায় মলে প্রবেশ করতে দেওয়া হল না ওই ব্যক্তিকে। ফের সামনে এল শপিং মলে পোশাক বিধির দাদাগিরি।
শনিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে শিবপুরের কাজিপাড়ার একটি নামী শপিং মলে। উলুবেড়িয়ার বাসিন্দা এক ব্যবসায়ী রেজ্জাক আলি মোল্লা ওই শপিং মলে ঢুকতে গেলে তাঁকে বাধা দেওয়া হয়। বাধা দেন শপিং মলের নিরাপত্তারক্ষীরা। তাঁকে শপিং মলে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না কেন? এই প্রশ্নের উত্তরে ওই মলের নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে জানান, লুঙ্গির মতো করে ধুতি পরে মলে প্রবেশ করা যাবে না। এটাই তাঁদের মলের পোশাক বিধি। এই কথা জেনে হতবাক রেজ্জাক নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে লিখিত নির্দেশ দেখতে চান। কিন্তু ওই মলের রক্ষীরা কোনও লিখিত নিয়ম দেখাতে পারেননি। তখন ওই ব্যবসায়ী মলে প্রবেশ করতে চাইলে তাঁকে রীতিমতো ধাক্কা দিয়ে মল থেকে বার করে দেওয়ার চেষ্টা হয়। প্রতিবাদ করলে নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে রেজ্জাকের বচসা বেধে যায়।
[টাকা না পেলে প্রাণে মারার হুমকি ফোন ব্যবসায়ীকে, অভিযোগের তির ২ জেলবন্দির দিকে]
রেজ্জাক আলি মোল্লার অভিযোগ, তাঁকে রীতিমতো অপমান করে হেনস্তা করেছে শপিং মলের নিরাপত্তারক্ষীরা। তাঁর কথায়, তিনি সবসময়ই লুঙ্গির মতো করে দক্ষিণ ভারতীয় কায়দায় ধুতি পরেন। বিমানে কিংবা নামী হোটেলেও তিনি লুঙ্গির মতো করে সাদা ধুতি পরেন। এমনকী, দেশের অন্য রাজ্যেও এই পোশাকেই তিনি ঘুরেছেন বলে জানান। এদিনও তিনি সাদা ধুতি পরেছিলেন। অবশেষে শিবপুরে এসেই বাধার সম্মুখীন হলেন। এদিন তিনি প্রথমে কলকাতায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে এক আত্মীয়কে দেখতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে তাঁর গাড়ির চালক ও আরও একজনকে সঙ্গে নিয়ে হাওড়ার শপিং মলে কেনাকাটা করতে যান। সেখানে যেতেই লুঙ্গির মতো করে ধুতি পরায় তাঁকে মলে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। গাড়ি রাখার পার্কিংয়েই তাঁকে ঢুকতে বাধা দিয়ে হেনস্তা করা হয়। তাঁর গাড়ির চালকের পোশাক নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাঁকেও বাধা দেওয়া হয়। তাঁকে হেনস্তা করায় রেজ্জাক শিবপুর থানায় তাঁর মানহানির জন্য অভিযোগ দায়ের করেন।
[শহরের নামী কলেজের কমনরুমে পড়ুয়াকে নগ্ন করে মার, ভাইরাল ভিডিও]
শিবপুরের মলে তাঁকে এই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হবে তা ভাবতে পারেননি। তাঁর কথায়, দক্ষিণ ভারতে মন্ত্রীরাও এই পোশাক পরেন। প্রসঙ্গত, দক্ষিণ ভারতে এই পোশাককে ‘মুনড’ বলা হয়। তবে পুলিশ এই ঘটনাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে রেজ্জাক থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। ওই শপিং মলের ড্রেস কোড রয়েছে। তাই এক্ষেত্রে পুলিশের কিছু করণীয় নেই। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মল কর্তৃপক্ষ মুখ খুলতে চায়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.