Advertisement
Advertisement

Breaking News

ডেঙ্গু

ডেঙ্গুর থাবায় ফের প্রাণহানি, মৃত্যু কলকাতা পুলিশের মহিলা কনস্টেবল-সহ ৩ জনের

শীতের সূচনা হলেও ডেঙ্গুর প্রকোপ না কমায় দুশ্চিন্তায় বিশেষজ্ঞরা।

A lady constable of Kolkata police dies of Dengue in this city
Published by: Sayani Sen
  • Posted:November 6, 2019 2:30 pm
  • Updated:November 6, 2019 2:59 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল দুই তরুণীর। মঙ্গলবার গভীর রাতে শহর ও শহরতলির দুই নার্সিংহোমে মৃত্যু হয়েছে ওই দুই মহিলার। মৃতদের নাম রুনু বিশ্বাস সরকার (২৮) এবং কেয়া গোস্বামী (২৬)। এদিকে শীতের সূচনা হলেও ডেঙ্গুর প্রকোপ কেন কমছে না, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

মৃত রুনু বিশ্বাস কলকাতা পুলিশের মহিলা কনস্টেবল পদে ছিলেন। তিনি আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় কর্মরত ছিলেন। বাগুইআটি উদয়নপল্লির বাসিন্দা রুনু ১১ দিন আগেই জন্ম দিয়েছিলেন সন্তানের। জানা গিয়েছে, কালীপুজোর আগের দিনই তিনি বাগুইআটির একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে সন্তানের জন্ম দেন। যদিও তাঁর মৃত্যুতে ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন রুনু মণ্ডলের দাদা প্রদীপ ঘোষ। প্রদীপবাবু জানিয়েছেন, জ্বর নিয়ে রুনুকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়। কিন্তু তাঁকে বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখা হয়। এমনকী পরিবারকে না জানিয়েই রুনুর ডেলিভারি করানো হয়। সন্তানের জন্ম দেয়ার পরও রুনুর শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে পরিবারকে কিছুই জানাননি চিকিৎসকরা। এর দু-তিনদিন পরই থেকেই রুনুর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ রুনুকে সেখানে রাখতে চায়নি। এরপরই তাঁকে বাইপাসের একটি নার্সিংহোমে ভরতি করা হয়। সেখানে ৩০ বোতল রক্ত দেওয়ার পরও শেষ রক্ষা হয়নি। মঙ্গলবার গভীর রাতেই মৃত্যু হয় রুনুর।

অন্যদিকে হাওড়ার সাঁতরাগাছির রামকৃষ্ণ লেন এলাকার বাসিন্দা কেয়া গোস্বামীও জ্বরে ভুগছিলেন। ভাইফোঁটার দিন থেকেই জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। তাঁকে সোমবার এলাকার এক বেসরকারি নার্সিংহোমে ভরতি করা হয়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ডেথ সার্টিফিকেটেও ডেঙ্গুর উল্লেখ রয়েছে। প্রসঙ্গত, তিনদিন আগেই ডেঙ্গুতে আক্তান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে দক্ষিণ হাওড়ার বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকার পি কে রায়চৌধুরি লেনের বাসিন্দা দশ বছরের এক বালিকার। এর আগে উত্তর হাওড়ার বেলগাছিয়া এলাকা ও মালিপাঁচঘরার ঘুসুড়িতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দুই শিশুকন্যার মৃত্যু হয়। যদিও কোনও ক্ষেত্রেই জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর ডেঙ্গুতেই যে মৃত্যু, তা স্বীকার করেনি। হাওড়া পুরসভাও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নিজেদের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেনি। জেলার মুখ্য সচিব ভবানী দাস জানিয়েছেন, আমরা এ বিষয়ে কোনও অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে এ বিষয়টি খতিয়ে দেখব।

আবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে নৈহাটি পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গরিফা কেশব পল্লির বাসিন্দা কৃষ্ণগোপাল অধিকারীর মৃত্যু হয়। জ্বর ও গায়ে ব্যাথা নিয়ে গত ২ নভেম্বর নৈহাটি হাসপাতালে ভরতি হন তিনি। রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়ে। মঙ্গলবার সকালে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে কল্যাণীর জে এন এম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।  ওই হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ডেথ সার্টিফিকেটে ডেঙ্গুর উল্লেখ রয়েছে।  

Advertisement

[আরও পড়ুন: শুধু হিন্দি-ইংরাজি-গুজরাটিতে জয়েন্ট এন্ট্রান্স কেন? বৈষম্যের অভিযোগ অভিষেকের]

গত দেড় মাসে ব্যাপক হারে ডেঙ্গুর প্রভাব বেড়েছে রাজ্যে। মঙ্গলবারও হাওড়ার চ্যাটার্জিহাটের বাসিন্দা কেয়া গোস্বামী নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। এদিন মৃত্যু হল এই পুলিশ কনস্টেবলের। কয়েকদিন আগেই মশাবাহিত এই রোগী প্রাণ গিয়েছিল কলকাতা পুরসভার এক কর্মীর। বস্তুত, বর্ষা বিদায় নিতেই জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। চিকিৎসকদের চেম্বারে রোগীদের ভিড় লেগে রয়েছে। ইতিমধ্যে কলকাতায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা আড়াই হাজারের আশেপাশে রয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। যদিও বেসরকারি মতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন তিন হাজারেরও বেশি মানুষ। দিন যত যাচ্ছে ততই ভয়ংকর আকার ধারণ করছে ডেঙ্গু। শীত পড়া শুরু হলেও ডেঙ্গুর প্রকোপ কার্যত কমছেই না। ডেঙ্গুর প্রকোপ রোধে পুরসভার তরফে একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে। এলাকা পরিষ্কার রাখা, ব্লিচিং ছড়ানো চলছে সবই। তবে তা সত্ত্বেও রোগের প্রকোপ রোখা যে সম্ভব হচ্ছে না, একের পর এক মৃত্যুতে আরও একবার প্রমাণ হল সেকথাই।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement