অর্ণব আইচ ও অভিরূপ দাস: বাড়ি থেকে বিয়ের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু বিয়ে করতে চাইছিলেন না তিনি। তা নিয়ে জুনিয়র চিকিৎসক মানসী মণ্ডলের সঙ্গে পরিবারের বিবাদ লেগেই ছিল। মনোমালিন্যের ফলে তৈরি হচ্ছিল মানসিক দূরত্ব। তাই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন ইদানীং। সম্ভবত সে কারণেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত জুনিয়র চিকিৎসকের (Junior doctor)। আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজের হস্টেল থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তদন্ত করছে এন্টালি থানার পুলিশ।
পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরের বাসিন্দা ছিলেন মানসী মণ্ডল। উত্তরবঙ্গ ডেন্টাল কলেজের ছাত্রী ছিলেন তিনি। পরে ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারির জন্য স্নাতকোত্তর কোর্স করতে আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজে সুযোগ পান। এখানেই পোস্ট গ্রাজুয়েট ট্রেনি অর্থাৎ পিজিটি হিসেবে দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছিলেন। তিনজনের সঙ্গে হস্টেলে থাকতেন। বৃহস্পতিবার সকাল ন’টা নাগাদ রুমমেটকে ফোন করেন মানসী। জানান একটু পরে কলেজে যাবেন তিনি। তবে বেলা ১টা বেজে গেলেও কলেজে যাননি বছর ছাব্বিশের মানসী। ইতিমধ্যে মোট ছ’বার বাড়ি থেকে ফোন আসে তাঁর। তবে কোনওবারই ফোন ধরেননি। তাই বাধ্য হয়ে রুমমেটকে ফোন করেন মানসীর বাড়ির লোকজন।
বিষয়টি প্রায় সঙ্গে সঙ্গে হস্টেল সুপারকে জানান মানসীর রুমমেট। ঘরের সামনে গিয়ে তাঁরা দেখেন দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। ডাকাডাকি করেও মানসীর সাড়া পাওয়া যায়নি। তিনি সঙ্গে সঙ্গে কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানান। খবর দেওয়া হয় এন্টালি থানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দরজা ভেঙে হস্টেলের ওই ঘরের মধ্যে ঢোকে। মানসীর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান সকলেই। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। মানসীর দু’টি মোবাইল এবং ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। এছাড়া ওই ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করা হয়েছে। যাতে বিয়ে নিয়ে পারিবারিক টানাপোড়েনে মানসিক অবসাদের কথার উল্লেখ ছিল বলেই জানা গিয়েছে। কলেজ সূত্রে খবর, মানসী কলেজে ভরতির সময় অবিবাহিত বলেই জানান। তবে বৃহস্পতিবার সুইসাইড নোট উদ্ধারের পর জানা যায় তাঁর রেজিস্ট্রি বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তবে সামাজিক বিয়ের জন্য পরিবার থেকে চাপ ছিল বলেই উল্লেখ রয়েছে সুইসাইড নোটে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.