দেবব্রত মণ্ডল: দালাল চক্রের ভয়ে বাড়িছাড়া মূক ও বধির এক যুবতী৷ অসহায় এই যুবতীর ফ্ল্যাট হাতাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ওই দালালচক্র৷ তাদের হাত থেকেই নিস্তার পেতে বাড়ি ছেড়ে হ্যান্ডিক্যাপড ডেভলপমেণ্ট অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি৷
বাবা সেনাবাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় মারা গিয়েছেন৷ মা তিন মাস আগে গত হয়েছেন৷ সেই সুযোগ নিয়ে যুবতীর অভিভাবক সেজে ফ্ল্যাটটি বিক্রি করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দালালরা৷ পরিবার-পরিজন আর কেউ নেই তাই শেষ সম্বলটি হারানোর কথা ভেবে আতঙ্কে দিন কাটছে তাঁর৷
আমানবিক এই ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতার অদূরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঠাকুরপুকুর এলাকার ভট্টাচার্য পাড়ায়৷ স্থানীয় সূত্রে খবর, মূক-বধির ওই যুবতীর নাম সোনিয়া দাস (২১)৷ চার বছর আগে সোনিয়ার বাবা মধুসূদন দাস সেনাবাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় মারা যান৷ বাবার মৃত্যুর পর মাকে নিয়ে ঠাকুরপুকুরের ফ্ল্যাট ছেড়ে উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহে থাকা শুরু করেন সোনিয়া৷ জুলাই মাসে মায়ের মৃত্যুর পর আবার ঠাকুরপুকুরে ফিরে আসেন তিনি৷ ফিরে আসার পর থেকেই ওই এলাকার কয়েকজন ফ্ল্যাটটি বিক্রি করার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ দিতে থাকে তাঁকে৷ সোনিয়ার প্রতিবন্ধকতার সুযোগ নিয়ে তাঁর অভিভাবক সেজে ফ্ল্যাটটি বিক্রি করার ছক কষে ওই দালালচক্র৷ যে প্রতিবন্ধী সংগঠনের কাছে আশ্রয় নিয়েছেন সোনিয়া, তাদের থেকে জানা যায়, ওই দালাল চক্র একজন মহিলাকে কাজে লাগিয়েছে৷
এক ব্যক্তি ফ্ল্যাটের কাগজপত্র নিয়ে রেখেছিল৷ কলকাতার ওই প্রতিবন্ধী সংগঠন উদ্যোগ নিয়ে সেই কাগজপত্র উদ্ধার করে৷ কিন্তু তারপর থেকেই বাড়তে থাকে সমস্যা৷
মূক ও বধির সংগঠনের পক্ষ থেকে রজনী বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “এলাকার কয়েকজন নানা ছলে ফ্ল্যাটটি বিক্রি করার চেষ্টা করছে৷ এলাকায় মেয়েটির নামে ভুল বোঝাচ্ছে৷” সংগঠনের তরফ থেকে ঠাকরপুকুর থানায় অভিযোগ জানাবেন তাঁরা৷ এখন দালালচক্রের আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে ওই সংগঠনেই থাকছেন যুবতী৷ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সুবিচার চান তিনি৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.