ছবি: প্রতীকী
অর্ণব আইচ: মৌলালির মোড়ে পুলকারটি পৌঁছনোর পর সন্দেহ হয়েছিল ট্রাফিক পুলিশকর্মীর। চালককে ডেকে কথা বলতে শুরু করার পরই তার মুখ থেকে বের হতে শুরু করেছিল মদের গন্ধ। পাশাপাশি তার অবস্থা দেখে রীতিমতো আঁতকে ওঠেন শিয়ালদহ ট্রাফিক গার্ডের সার্জেন্ট মানবেন্দ্র বিশ্বাস ও অন্য ট্রাফিক পুলিশকর্মীরা। পুলকারটির ভিতর তখন বসে রয়েছে ১১ জন পড়ুয়া। আর তাদের বাড়ি পৌঁছে দিতে যাচ্ছে ওই মদ্যপ পুলকার চালক।
মাত্র দিন দু’য়েক আগে যেখানে পোলবায় এতবড় একটি পুলকার (Pull car) দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে, এখনও দুই পড়ুয়া হাসপাতালে ভরতি। সেখানে কীভাবে শহরের বুকে মদ্যপান করে পুলকার চালক পড়ুয়াদের নিয়ে যাতায়াত করছে, তা বুঝতে পারেননি তাঁরা। তাই ব্রেথ অ্যানালাইজার দিয়ে ওই যুবককে পরীক্ষা করে ট্রাফিক পুলিশ। দেখা যায়, যন্ত্রে মাপ উঠেছে ২৪৬.২। যেখানে স্বাভাবিক হচ্ছে ৩০। দীনেশ সিং নামে ওই পুলকার চালককে গ্রেপ্তার করেছে তালতলা থানার পুলিশ। পুলিশের চালকই পড়ুয়াদের পৌঁছে দিয়ে আসে তাদের বাড়িতে। এদিকে, সোমবার সকালেই উল্টোডাঙায় একটি পুলকারের ধাক্কায় আহত হন এক স্কুটি চালক। এতে পুলকারে থাকা পড়ুয়ারা আহত না হলেও তারা আতঙ্কের শিকার হয়। পুলকারটি আদৌ বাণিজ্যিক লাইসেন্স নিয়ে চালাচ্ছিল না বলে অভিযোগ উঠেছে। একটি বেসরকারি গাড়িই পুলকার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। সেই ক্ষেত্রে সেটি বেআইনি কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মধ্য কলকাতার একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে মৌলালি মোড়ের দিকে আসে ওই পুলকারটি। পোলবার ঘটনার পর সারা শহরজুড়ে পুলকার পরীক্ষা শুরু হয়েছে। চালককে দেখে এক পুলিশকর্মীর সন্দেহ হয়। তিনি গাড়ি দাঁড় করিয়ে চালকের কাছে কাগজপত্র দেখতে চান। তখনই তার মুখ থেকে মদের গন্ধ পায় পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গে ব্রেথ অ্যানালাইজার দিয়ে পরীক্ষা করে বুঝতে পারে যে, চালক মদ্যপ। দুপুরেই অনেকটা মদ্যপান করেছে সে। দীনেশ সিং নামে ওই চালককে তখনই তালতলা থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। চালকের ওই অবস্থা দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে পড়ুয়ারা। তবে পুলিশ অফিসাররা তাদের আশ্বস্ত করেন। গাড়ির মালকিনকে ডেকে নিয়ে আসা হয়। তাঁকে বলা হয় পড়ুয়াদের বাড়ির রাস্তা চিনিয়ে দিতে। গাড়ির স্টিয়ারিংয়ের দায়িত্ব নেন কলকাতা পুলিশের এক চালক। সঙ্গে ছিলেন অন্য এক পুলিশকর্মী।
পুলিশই ওই পুলকার চালিয়ে পড়ুয়াদের বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসে। ফের মৌলালিতে গাড়িটি ফিরিয়ে নিয়ে আসার পর সেটি আটক করা হয়। এই ঘটনার পর বিষয়টি নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন পুলিশ আধিকারিকরা। তাঁরা ধৃত দীনেশকে জেরা করে জানার চেষ্টা করেন, সে অন্য পুলকার বা স্কুলবাস চালকদের সঙ্গে বসে মদ্যপান করেছিল কি না। এবার স্কুলবাস ও পুলকার পরীক্ষা করার সময় তার চালকরা মদ্যপান করে রয়েছে কি না, তাও পরীক্ষা করে দেখা হবে।
সোমবার সকালে উল্টোডাঙার ক্যানাল ইস্ট রোডে ৬ জন পড়ুয়াকে নিয়ে আসছিল একটি পুলকার। হঠাৎ একটি স্কুটি রাস্তার উপর ইউ টার্ন করতে যায়। পুলকারের চালক ব্রেক কষতে গেলেও গাড়িটি স্কুটিকে ধাক্কা দেয়। স্কুটিচালক অভিজিৎ মণ্ডল ও পিছনে বসা তাঁর স্ত্রী মমতা মণ্ডল এই দুর্ঘটনায় আহত হন। খবর শুনেই ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আর পড়ুয়াদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.