সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চেম্বারে বসে হাওড়া জেলা হাসপাতালের (Howrah District Hospital) ডিসচার্জ সার্টিফিকেটে করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট লিখে দিলেন ডাক্তার! কিন্তু রোগী কোনওদিন হাওড়া হাসপাতালে ভরতিই হননি। তবে কেন এমন কাণ্ড? প্রশ্ন করতেই অভিযুক্ত চিকিৎসকের সাফাই, “রোগীর অবস্থা ভাল ছিল না। হাসপাতালে গেলে ঝক্কি পোহাতে হত। তাই অন্য জায়গা থেকে করোনা পরীক্ষা করিয়ে রিপোর্ট দিয়েছি।” কিন্তু এর পিছনে লুকিয়ে থাকা আসল রহস্য কী? আদৌ রোগীদের করোনা পরীক্ষা করাতেন অমিত বিক্রম নামে ওই চিকিৎসক?
আলিপুরের বাসিন্দা এক যুবকের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রকাশ্যে এসেছে গোটা বিষয়। জানা গিয়েছে, ১০ জুলাই জ্বর নিয়ে অমিতবাবুর চেম্বারে গিয়েছিলেন তিনি। ওই যুবককে বেশ কয়েকটি দামি ইনঞ্জেকশন ও ওষুধ দেন ওই চিকিৎসক। তাঁর চেম্বার থেকেই ওষুধ কিনতে বাধ্য হন রোগী। এরপর তিনি অনেকটা সেরে ওঠার পর অমিত বিক্রম বলেন, করোনা (Corona Virus) পরীক্ষা করাতে হবে। নিজেই নমুনা সংগ্রহ করেন এবং ৩১০০ টাকা নেন ওই চিকিৎসক। কয়েকদিন পেরতেই রিপোর্টের জন্য যুবকের পরিবারের তরফে ফোন করা হয় তাঁকে। তখন তিনি বলেন, ওই যুবক করোনা আক্রান্ত। এরপর তাঁরা রিপোর্ট দাবি করতেই বেঁকে বসেন অমিত। বলেন, এই রিপোর্ট মৌখিকভাবেই জানানো হচ্ছে। কিন্তু রোগীর পরিবার এই কথা মানতে রাজি না হওয়ায় যুবককে চেম্বারে যেতে বলেন অমিত। অভিযোগ, সেখানে যেতে প্রথমে ওই যুবককে জানানো হয় যে তিনি আক্রান্ত নন, আগের রিপোর্ট ভুল ছিল। এরপর হাওড়া হাসপাতালের ডিসচার্জ সার্টিফিকেটে লিখে দেওয়া হয় যে ১৯ থেকে ২২ জুলাই হাসাপাতাল ছিলেন তিনি। এবং তিনি করোনা আক্রান্ত নন। এতেই সন্দেহ দানা বাঁধে যুবকের মনে। প্রশ্ন জাগে যে, ভরতি না হওয়া সত্ত্বেও কেন হাসপাতালের ডিসচার্জ সার্টিফিকেট দেওয়া হল তাঁকে।
এরপরই গোটা ঘটনা জানিয়ে কলকাতা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়। এবিষয়ে হাওড়া জেলা হাসপাতালের সুপার নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলা হলে তিনি জানান, “এই ডিসচার্জ সার্টিফিকেট ভুয়ো।” জানা গিয়েছে, অমিত বিক্রম নামে একজন হাওড়া হাসপাতালের ডিএনবি পিজিটি রয়েছেন। কিন্তু তিনিই এই ‘গুণধর’ কিনা সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। যদিও অভিযুক্তের দাবি, “তিনিই হাওড়া হাসপাতালের পিজিটি। রোগীর ভালর জন্যই নাকি একাজ করেছিলেন তিনি!” বিষয়টি জানাজানি হতেই অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন হাসপাতাল সুপার। কিন্তু হাসপাতালের ডিসচার্জ সার্টিফিকেট বাইরে গেল কীভাবে? তা জানার চেষ্টা চলছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.