প্রতীকী ছবি।
অর্ণব আইচ: ঠিক যেন ‘বান্টি অউর বাবলি’ সিনেমার স্ক্রিপ্ট। ওই সিনেমায় নাম ভাঁড়িয়ে বান্টি ও বাবলি একের পর এক আর্থিক জালিয়াতি করে। একটি ‘অপারেশন’ সফল হওয়ার পর কিছুদিন গা ঢাকা। মামলা কিছুটা ধামাচাপা পড়লে ফের ‘অ্যাকশন’ শুরু। এভাবেই এগিয়ে ছিল ছবির গল্প। তবে এবার পর্দায় নয়, বাস্তবে প্রায় একই কাণ্ড ঘটালেন এক দম্পতি। অভিযোগ, দক্ষিণ শহরতলির হরিদেবপুরে ক্যানসার আক্রান্ত এক গৃহবধূ ও তাঁর বয়স্ক শাশুড়িকে খুনের চেষ্টা চালায় প্রতারকেরা। এমনকী চিকিৎসার জন্য রাখা চার লক্ষ টাকা নিয়ে চম্পট দেয় তাঁদের পূর্ব পরিচিত ‘ভৃত্য দম্পতি’। হরিদেবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হলে দুজনকেই গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অভিযুক্ত দম্পতি আগেও একই ধরনের অপরাধ করেছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
কয়েকমাস আগে হরিদেবপুরের বাসিন্দা অভিজিৎ দাসের বাড়িতে তাঁর অসুস্থ স্ত্রী ও মাকে দেখাশোনার কাজ নেন অভিযুক্ত বৈদ্য ও সঞ্জু সরকার। তাঁরা নিজেদের স্বামী-স্ত্রী হিসাবে পরিচয় দেন। অভিজিৎবাবু রাজাবাজারের একটি নামী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। তাঁর স্ত্রী ক্যানসার আক্রান্ত। মা বয়সজনিত কারণে অসুস্থ। অভিযুক্ত দম্পতি কাজে যোগ দেওয়ার পর সব ঠিকই চলছিল। কিন্তু হঠাৎই কাজ ছেড়ে দেন তাঁরা। তবে মঙ্গলবার দুপুর গড়িয়ে বিকেলে অভিজিতের বাড়িতে হাজির হন তাঁরা।
পূর্ব পরিচিত হওয়ায় সহজেই বাড়িতে প্রবেশধিকার পান ওই দম্পতি। অভিযোগ, শরীর কেমন? নতুন কেউ কাজে যোগ দিয়েছেন কি না? এই সব কথার মাঝে শাশুড়ি ও বউমাকে জোর করে চামচে মাদক জাতীয় তরল খাইয়ে দেন। দুজনে অবচেতন হয়ে পড়লে শুরু হয় ‘অপারেশন’। চেনা ঘরে টাকা খুঁজতে অসুবিধা হয়নি। অভিযোগ, আলমারি খুলে চিকিৎসার জন্য রাখা টাকা নিয়ে পালিয়ে যান প্রতারক দম্পতি।
এদিকে সন্ধ্যার দিকে আক্রান্ত মহিলাদের সঙ্গে দেখা করতেন আসেন প্রতিবেশীরা। ঢুকতেই খোলা দরজা দেখে সন্দেহ হয় তাঁদের। ঘরে ঢুকে দেখেন আলাদা আলাদা ঘরে পড়ে আছেন শাশুড়ি ও বউমা। খবর দেওয়া অভিজিৎবাবুকে। তিনি তড়িঘড়ি ছুটে এসে ডাক্তার ডাকেন। প্রাথমিক চিকিৎসার পর জানা যায়, মাদক খাইয়ে তাঁদের অজ্ঞান করা হয়েছে।
এর পরই জানা যায় ঘর থেকে টাকাও চুরি গিয়েছে। হরিদেবপুর থানার পুলিশ তদন্তে নেমে ওই দম্পতির ছবি, মোবাইলের সূত্র ধরে তাঁদের গ্রেপ্তার করে। ধৃতদের থেকে চুরি যাওয়া টাকা উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের অনুমান, এই দম্পতি আগেও এমন অপরাধ করেছেন। তাঁরা কোনও একটি এলাকায় বাড়ি ভাড়া নেন। আক্রান্ত পরিবারের মতো কোনও পরিবারে কাজ নেয়। সদস্যদের বিশ্বাস অর্জন করে কাজ ছেড়েও দেন। পরে মউকা বুঝে অপারেশন চালান। ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.