সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সন্তান করোনা (Coronavirus) আক্রান্ত। বাড়ছিল অসুস্থতা। তাই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হয়। উত্তর ২৪ পরগনার ইছাপুরের বাসিন্দা শুভ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায় নামে ওই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে নিয়ে একের পর এক সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে যান তাঁর বাবা-মা। তবে সন্তানকে ভরতি করাতে পারেননি। পরে রাতে মৃত্যু হয় তার।
আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়ে শুভ্রজিৎ। শ্বাসকষ্ট হতে শুরু করে। প্রথমে তাকে কামারহাটির ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে সেই সময় উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর রক্তে শর্করার মাত্রা অত্যন্ত বেশি ছিল। তাই তাঁর সেখানে চিকিৎসা হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। সেখান থেকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে যান তাঁরা। তবে সেখানেও চিকিৎসার জন্য দীর্ঘক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এরপর পুলিশের সহযোগিতায় নার্সিংহোমে ওই ছাত্রের করোনা পরীক্ষা করানো হয়। রিপোর্টে করোনার প্রমাণ মেলায় তাঁকে বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি নিতে অস্বীকার করে। এরপর তাঁরা আবারও কামারহাটি ইএসআই হাসপাতালে যান। সেখান থেকে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে যেতে বলা হয় তাঁদের। সেখানে যান। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানিয়ে দেয় বেড নেই। এরপর আবারও কামারহাটির ইএসআই হাসপাতালে ফিরে যান তাঁরা।
এরপর লালবাজারে যোগাযোগ করেন তাঁরা। পুলিশের সহযোগিতায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে তরুণকে নিয়ে আসা হয়। তবে সেখানেও জানিয়ে দেওয়া হয় বেড নেই। অসুস্থ ছাত্রের মায়ের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তর্কাতর্কি শুরু হয়। সন্তানের চিকিৎসা না হলে আত্মহত্যার হুমকি দেন ওই মহিলা। তারপর স্ট্রেচারে করে ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে সেই সময় কোনও স্বাস্থ্যকর্মী তাঁদের সহযোগিতা করেননি বলে অভিযোগ। তবে রাতেই মৃত্যু হয় তার। পরিবারের অভিযোগ, সঠিক সময়ে চিকিৎসা হলে হয়তো সন্তান প্রাণে বেঁচে যেত। বারবার রোগী প্রত্যাখ্যানের অভিযোগ সামনে এসেছে। কড়া ব্যবস্থার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তা সত্ত্বেও সমস্যা যে পুরোপুরি মেটেনি শুভ্রজিতের মৃত্যুই বোধহয় তা প্রমাণ দিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.