ছবি: প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা সংক্রমণ রুখতে লকডাউন (Lockdown) জারি করে কেন্দ্র সরকার। অদৃশ্য শত্রুর হাত থেকে বাঁচতে ঘরের ভিতর থাকার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। তবে সেই সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রথম সারিতে দাঁড়িয়ে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা। তবে এত লড়াইয়ের পরেও সমাজের থেকে তাঁরা পাচ্ছেন না কিছুই। পরিবর্তে করোনা আক্রান্ত দিদাকে হাসপাতালে ভরতি করাতে গিয়ে রীতিমতো নাকাল হতে হল কাঁকুড়গাছির বাসিন্দা এক চিকিৎসককে।
ঠিক কী হয়েছিল? চিকিৎসকের দিদা অন্তত সত্তর বছর বয়সি। টানা বেশ কয়েক বছর ধরে মধুমেহর সমস্যা ভুগছেন তিনি। বৃদ্ধার এক নাতি এবং নাতজামাই সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক। তাঁরাই এতদিন বৃদ্ধার দেখভাল করতেন। নাতি এবং নাতজামাইয়ের চিকিৎসা চলছিল। তবে গত ৩১ জুলাই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবার ওই বৃদ্ধাকে কোন সরকারি কিংবা বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হবে। সেই অনুযায়ী তাঁকে সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। সেখানে তাঁর করোনা পরীক্ষা করা হয়। রিপোর্ট আসার পর জানা যায় ওই বৃদ্ধা করোনা আক্রান্ত। ২ আগস্ট ওই বৃদ্ধাকে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। মেডিক্যাল সার্টিফিকেটে হোম আইসোলেশনে থাকার পরামর্শের কথাই উল্লেখ করেন চিকিৎসকরা।
কিন্তু কাঁকুড়গাছির আবাসনে বৃদ্ধাকে নিয়ে যাওয়ার পরই শুরু হয় অশান্তি। বেসরকারি হাসপাতালের থেকে দেওয়া সার্টিফিকেট দেখালেও তা মানতে চাননি প্রতিবেশীরা। গত মঙ্গলবার চরম হেনস্তার শিকার হন তাঁর। বাধ্য হয়ে মানিকতলা থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে। তবে তাতেও রাজি হননি প্রতিবেশীরা। বাধ্য হয়ে ওই বৃদ্ধাকে কোনও সরকারি কিংবা বেসরকারি হাসপাতালে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কোনও বেসরকারি হাসপাতালে বৃদ্ধাকে ভরতি রাখার সুযোগ পাননি তাঁরা। বাধ্য হয়ে সরকারি ওয়েবসাইটে ফর্মপূরণ করেন। তবে ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ। বাধ্য হয়ে দিদাকে বরাহনগরের এক নার্সিংহোমে ১৮ ঘণ্টা রাখা হয়। সেখানে ৫২ হাজার টাকা দাবি করা হয়। অবশেষে যদিও এক পরিচিতের মাধ্যমে ওই বৃদ্ধাকে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা হয়। তবে হাসপাতালে ওই বৃদ্ধা সুস্থ থাকবেন তো, এই চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছে তাঁর পরিজনদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.