Advertisement
Advertisement

Breaking News

Bus

যাতায়াত এখন ভরপুর আনন্দের, কথায়-সুরে বাস যাত্রীদের পথ চেনাচ্ছেন কন্ডাক্টর তন্ময় মাহাতো

ব্যাপারটা কী?

A Bus Conductor of kolkata made song about destination and route | Sangbad Pratidin
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:July 26, 2022 2:40 pm
  • Updated:July 26, 2022 2:40 pm  

নব্যেন্দু হাজরা: আর বড়জোর বছর দুয়েক। এভাবে চলতে থাকলে গোটা শহরে সমস্ত লোক সমস্ত অলিগলি সব সরকারি অফিস, যাবতীয় ব্যাঙ্ক, স্কুল, খাবারের দোকানের ঠিকানা সব জেনে ফেলবেন। সৌজন্যে সরকারি বাসের কন্ডাক্টর তন্ময় মাহাতো। নিশ্চয়ই ভাবছেন ব্যাপারটা কী? 

তন্ময় মাহাতোর বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) ঘটকপুকুরের ঈশ্বরীপুর গ্রাম। কন্ডাক্টরি করেন এসি৯, এস৯, এসি১২, এসি২৩এ, এসি ৩০সি-র মতো গোটা দশেক রুটের বাসে। তবে তিনি শুধু টিকিট কেটে কন্ডাক্টরির কাজটা সেরে ফেলেন না। তাঁর মূল কাজ বাস স্টপেজের সঙ্গে তার আশপাশের এলাকার পরিচয় করিয়ে দেওয়া। এবং সেটা একেবারে অ্যানাউন্সমেন্টের কায়দায়। ঠিক এখানেই তাঁর ইউএসপি। ওই সমস্ত রুটের বাসের যাত্রীরাই শুধু নন, তন্ময়বাবুকে বোধহয় চিনে ফেলেছেন বিভিন্ন বাসস্টপেজে অপেক্ষায় থাকা অন্যবাসের যাত্রীরাও। তন্ময়বাবু এইভাবে ঘোষকের মতো কন্ডাক্টরি করছেন বছর চারেক। সোমবারই মুকুন্দপুর (Mukundupur) থেকে এসি৯ বাসে উঠেছিলেন অভিনব সাহা। তিনি বলছিলেন, “তন্ময়দার সঙ্গে আমার এই রুটে আলাপ। আমিই তন্ময়দাকে বলেছি তুমি এইভাবে আরও বছর দুয়েক অ্যানাউন্সমেন্ট চালিয়ে গেলে শহরে আসা সবাই গোটা কলকাতা চিনে যাবে।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: SSC দুর্নীতি মামলায় মন্ত্রিত্ব থেকে পার্থকে সরানো হোক, মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি অধীর চৌধুরীর]

এদিন বাস অভিষিক্তা মোড় পার করতেই তন্ময়বাবু তাঁর নিজস্ব ঢঙে ঘোষণা শুরু করলেন, “রুবি নামার থাকলে গেটে আসবেন। যাঁরা গড়িয়াহাট যাবেন, জিএসটি ভবন যাবেন, বাসন্তী দেবী কলেজ যাবেন, বালিগঞ্জ স্টেশন যাবেন, রাসবিহারী যাবেন, কসবা আইটিআই কলেজ যাবেন, দেশপ্রিয় পার্ক যাবেন, মা সারদা হসপিটাল যাবেন, তাঁরা গেটে চলে যাবেন।” আর এই বলার ধরণটাই তন্ময়বাবুর ইউএসপি। তাঁর কথায়, “আমি প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ। যখন শহরে আসি কিছু চিনতাম না। যে কারণে বহুবার ভুলভাল রাস্তায় চলে গিয়েছি। খুব অসুবিধা হত। নিজের সেই সমস্যা উপলব্ধি করেই আমি সিদ্ধান্ত নিই আমার বাসের যাত্রীদের স্টপেজের পাশাপাশি রাস্তা চিনিয়ে দেওয়ার। যাতে তাঁরা সমস্যায় না পড়েন।”

তন্ময়বাবুর ভাল ব্যবহার এবং অভিনব উপায়ে রাস্তা চেনানোর কায়দার কারণেই তাঁর ফ্যান হয়ে গিয়েছেন বহু যাত্রী। অনেকে তৈরি করেছেন তাঁকে নিয়ে ভিডিও। যার ভিউ পঁচিশ হাজার ছাড়িয়েছে। তন্ময়বাবু বলেন, “বাড়ির সবাইকে যেমন আমি নিজের মনে করি, গাড়ির সবাইকেও নিজের মনে করি। তাই তাঁদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেটা দেখা আমার কাজ। আমি বিভিন্ন রুটে যাই। গিয়ে গিয়ে রাস্তা চিনেছি।” বছর চারেক হল চুক্তিভিত্তিক কন্ডাক্টর হিসাবে কাজ করছেন সিএসটিসিতে। মাস ছয়েক কাজ করার পরই এই অভিনব কায়দায় সমস্ত যাত্রীকে রাস্তা চেনান তিনি। গাড়ি ছাড়ার সময় বলেন, “মনোযোগ সহকারে শুনবেন, আমি সবার কাছে যাব, সবার টিকিট নেব। সবাইকে নির্দিষ্ট জায়গায় নামিয়ে দেব।” আর শেষ স্টপেজে গিয়ে বলেন, “সবাই ভালভাবে থাকবেন, বাঁদিকে দেখে নামবেন। আমার কোনও ভুলত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন।” তাঁর এই পথপ্রদর্শকের ভূমিকায় খুশি সল্টলেকের ডিপো ট্রাফিক ম্যানেজারও।

[আরও পড়ুন: Partha Chatterjee: ১০ বছরের সম্পর্ক, যৌথভাবে সম্পত্তি কিনেছিলেন পার্থ-অর্পিতা! জোরাল দাবি ইডির]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement