অভিরূপ দাস: জন্ম থেকে পিঠে ছিল টিউমার। আচমকাই তা ফেটে যায়। দিশেহারা হয়ে বাবা-মা শিশুকে কালনা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। অভিযোগ, সেখানে চিকিৎসা মেলেনি। এনআরএস হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয় শিশুকে। বহু কষ্টে কলকাতায় আসেন ঠিকই। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। এনআরএস পাঠিয়ে দেয় এসএসকেএম হাসপাতালে (SSKM Hospital)। অভিযোগ, সাতদিন ধরে জরুরি বিভাগের সামনে ফুটপাথে দিন কাটলেও চিকিৎসা পায়নি ছেলে। আর তার জেরেই মাত্র ১৪ মাস বয়সে প্রাণ হারাল কোলের সন্তান। সঠিক সময়ে চিকিৎসা পেলে ঘরের ছেলেকে বাঁচানো সম্ভব হত বলেই জানিয়েছেন তার কাকা। এই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাসপাতাল সুপার।
বর্ধমানের কালনার নিভূজি বাজারের বাসিন্দা সুমিত সর্দার। বয়স হয়েছিল মাত্র ১৪ মাস। জন্ম থেকে তার পিঠে একটি টিউমার ছিল। ওই টিউমারটি গত ২ অক্টোবর ফেটে যায়। এরপর ওই শিশুকে নিয়ে কালনা মহকুমা হাসপাতালে যান তাঁর পরিজনেরা। সেখান থেকে সোজা কলকাতার এনআরএস হাসপাতালে রেফার করে দেয় সুমিতকে। বহু কষ্ট করে শিশুকে নিয়ে ৫ অক্টোবর কলকাতায় আসেন পরিজনেরা। এনআরএস হাসপাতাল (NRS Hospital) থেকে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় শিশুকে। ছোট্ট সুমিতের কাকা বীরেন সর্দারের দাবি, এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কখনও সাততলা, চারতলা, দোতলা এভাবে ঘুরিয়েছে। মেডিসিন থেকে সার্জারি বিভাগ সর্বত্র ঘুরেও বেড পাওয়া যায়নি। এমনকী জেনারেল বেডও পায়নি খুদে। তাই বাধ্য হয়ে জরুরি বিভাগের সামনে ফুটপাথে বসেছিলেন তাঁরা। সোমবার দুপুরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে শিশুটি। সঠিক সময়ে চিকিৎসা পেলে হয়তো সুমিত বেঁচে যেত বলেই মনে করছেন তার কাকা।
রাজ্যের সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠায় রীতিমতো চাপানউতোর শুরু হয়েছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সুপার রঘুনাথ মিশ্র বলেন, “সাতদিন ধরে বেড না পেয়ে জরুরি বিভাগের সামনে কেউ বসে থাকার তো কথা নয়। তবু ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হবে।” তিনি পেডিয়াট্রিক বিভাগের প্রধানকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.