ছবি: প্রতীকী
অর্ণব আইচ: গলায় ছোট ছোট নখের দাগ। শ্বাসরোধের চিহ্ন স্পষ্ট। ময়নাতদন্তের এই রিপোর্টই আনন্দপুরের তিনদিনের শিশুকন্যার মৃত্যুর মোড় ঘুরিয়ে দিল। কারণ, রিপোর্ট অনুযায়ী, শিশুটির খুনের পিছনে রয়েছে কোনও শিশু। তবে কী দেড় বছরের দাদাই খেলতে খেলতে এই দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছে? ময়নাতদন্ত সেই রহস্য ভেদের চেষ্টায় আনন্দপুর থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনাটি ঘটেছে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে। ঘটনার সময় আনন্দপুরের নোনাডাঙায় বাড়িটিতে ওই খুদের সঙ্গে ছিল তার মা ও দাদা। বাবা বেরিয়েছিলেন কাজে। ঘরের সমস্ত কাজসেরে বধূ ওই তিনদিনের শিশু কন্যাকে দুধ খাওয়াতে গিয়ে দেখেন সে নড়াচড়া করছে না। তিনি হতবাক হয়ে যান। কান্নাকাটি শুরু করেন। ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। হাসপাতালে নিয়ে গেলে শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। তার দেহ ময়নাতদন্তে পাঠায় হাসপাতাল। সম্প্রতি ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পুলিশের হাতে আসার পরে ঘটনার মোড় ঘুরে যায়। ময়নাতদন্তে উল্লেখ করা আছে যে, শ্বাসরোধ করে শিশুটিকে খুন করা হয়েছে। তার গলায় রয়েছে কয়েকটি নখের দাগ। সেই দাগগুলি অত্যন্ত ছোট। সেগুলি প্রাপ্তবয়স্ক কারও হওয়ার সম্ভাবনা কম। এই বিষয়ে শিশুটির মাকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি দাবি করেন, ওই সময় ঘরের দরজা বন্ধ ছিল। তৃতীয় ব্যক্তি ঘরে আসার সম্ভাবনা ছিল না বললেই চলে।
কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুটির গলায় শ্বাসরোধের যে চিহ্ন আছে, কোন প্রাপ্তবয়স্ক গলা টিপলে সেই চিহ্ন থাকার সম্ভাবনা কম। ওই সময় মৃত শিশুটির দাদাও যে ঘরে ছিল, তা ওই বধূ স্বীকার করেছেন। সে ক্ষেত্রে কোনওভাবে খেলতে খেলতে দেড় বছরের শিশুটি তার বোনের উপর পড়ে যায় অথবা খেলার ছলে গলায় হাত দিয়ে কোন দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলতে পারে, পুলিশ এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিতে পারছে না। অবশ্য এক্ষেত্রে মাকে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কারণ, মহিলার শিশুপুত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ সম্ভব নয়। দেড় বছরের ওই শিশু এখনও স্পষ্টভাবে কথাই বলতে শেখেনি। বোনের প্রতি হিংসা থেকে ওই শিশু একাণ্ড ঘটিয়েছে কি না, মায়ের থেকে সেই তথ্য জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। এর পিছনে তৃতীয় ব্যক্তি থাকার সম্ভাবনা আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.