বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: দলত্যাগ করার পরও বিধানসভায় পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (PAC) চেয়ারম্যান পদে বসানো হয়েছে মুকুল রায়কে (Mukul Roy)। অর্ধশতাব্দীর প্রথা ভাঙা নিয়ে ইতিমধ্যেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছে বিজেপি। মঙ্গলবার এর প্রতিবাদে বিধাসভার মোট ৮টি কমিটি থেকে ইস্তফা দিলেন গেরুয়া শিবিরের বিধায়করা।
৬ জন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান পদ এবং দু’জন হজ কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেন। তালিকায় রয়েছেন বিরোধী দলের মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা, বিষ্ণু প্রসাদ শাস্ত্রী, মিহির গোস্বামী, আনন্দময় বর্মন, অশোক কীর্তনীয়া, নিখিল দে, দীপক বর্মন-সহ মোট আটজন। পদত্যাগ করেই স্পিকারের ঘর থেকে বেরিয়ে যান বিজেপির এই আট বিধায়ক। এরপরই তাঁদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানান অধ্যক্ষ। কিন্তু নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় তাঁরা। তাঁদের দাবি, যেখানে মুকুল রায়কে PAC চেয়ারম্যান করা হয়েছে, যেভাবে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছেন, তা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তাই মুকুল রায় PAC চেয়ারম্যান পদে থাকলে বিজেপি বিধায়করা (BJP MLA) নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়াবেন না।
আগামী শুক্রবার ৪১ জন চেয়ারম্যানকে বৈঠকে ডেকেছেন অধ্যক্ষ। কিন্তু বিজেপির তরফে সেখানে কেউ থাকবেন না বলেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজই রাজ্যপালের সঙ্গেও দেখা করবেন পদত্যাগ করা বিধায়করা বলেই খবর।
প্রথা ভেঙে PAC চেয়ারম্যান পদে বসানো হয়েছে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া মুকুল রায়কে। এই ঘোষণার পরই প্রতিবাদ জানিয়ে ওয়াকআউট করেছিলেন বিজেপি (BJP) বিধায়করা। জানিয়ে দিয়েছিলেন, সমস্ত কমিটির চেয়ারম্যান পদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন বিরোধীরা। কারণ, তাঁদের অভিযোগ অনুযায়ী, বিধানসভায় বিরোধী হিসেবে বিজেপির ক্ষমতা খর্ব করা হচ্ছে। বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটি ও হাউস কমিটি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই শাসক-বিরোধী টানাপোড়েন চলছিল। বিরোধীদের দাবি ছিল, ১৫টি কমিটির চেয়ারম্যান পদ। ১০টির বেশি ছাড়তে রাজি হয়নি শাসক শিবির। সিদ্ধান্তে অনড় ছিল বিরোধীরাও। তবে দু’পক্ষের মধ্যে বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে PAC চেয়ারম্যান পদ নিয়ে। চেয়ারম্যান কে হবেন, তা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়। এই কমিটির জন্য ছ’জন বিধায়কের নাম পাঠায় গেরুয়া শিবির। সেখানে মুকুল রায়ের নাম ছিল না। এর মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, মুকুল রায় যেহেতু বিজেপিরই বিধায়ক, তাই তাঁকেই চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হবে। বিধানসভা অধিবেশন চলাকালীন তা কার্যকরও করা হয়। এবার পূর্বপরিকল্পনা মাফিকই প্রতিবাদ স্বরূপ ইস্তফা দিলেন বিরোধী দলের বিধায়করা।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যা করেছি আইন মেনেই করেছি। সংসদে ডেপুটি স্পিকার ইলেকশন নিয়ে বিরোধীরা দাবি করছে। সেটা নিয়ে এখানকার বিরোধীরা দাবি তুলবে? রাজ্যপাল-রাষ্ট্রপতি যেখানে ইচ্ছা ওরা যাক।” এরপরই জুড়ে দেন, “বিজেপি বিধায়কদের কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগপত্র পেয়েছি। পরীক্ষা করে তারপর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.