ছবি: প্রতীকী
কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: ক্যানসারের চিকিৎসা করানোর জন্য কলকাতায় এসে মৃত্যু হল মিজোরামের প্রবীণ বাসিন্দার। রবিবার রাতে সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বছর পঁচাত্তরের ওই ব্যক্তির শরীরে করোনার উপসর্গ ছিল। তাঁর নমুনা পরীক্ষা করার জন্য পাঠানো হয়েছিল। মিজোরাম থেকে আগত দুই ব্যক্তির অসুস্থতার পর সংক্রমণের আশঙ্কায় গত সপ্তাহেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল সল্টলেকের মিজোরাম হাউস। এই ব্যক্তির মৃত্যুর পর মিজোরাম হাউসের ২৫ জনকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে।
লকডাউনের আগেই মিজোরাম থেকে দুই ব্যক্তি এসেছিলেন কলকাতায়। তাঁদের মধ্যে ৭৫ বছরের এক ব্যক্তি ক্যানসার আক্রান্ত। তাঁর চিকিৎসার জন্যেই এখানে এসে সল্টলেকের IB ব্লকের একটি বাড়িতে উঠেছিলেন তাঁরা। যাতায়াত ছিল মিজোরাম হাউসেও। গত শনিবার তাঁদের শরীরে করোনা উপসর্গ দেখা দেওয়ায় হাসপাতালে ভরতি হন। তারপরই সংক্রমণের আশঙ্কায় বিধাননগর পুর প্রশাসনের তরফে সিল করে দেওয়া হয় মিজোরাম হাউস। জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়েছে ভবনে।IB ব্লকের যে বাড়িতে তাঁরা ছিলেন, সেই বাড়ির সদস্যদেরও কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়। তারই মধ্যে রবিবার রাতে এই ব্যক্তির মৃত্যুতে আতঙ্ক আরও বেড়েছে। যদিও মিজোরামের এই বাসিন্দা যে করোনারই বলি, তা এখনও নিশ্চিত করেনি স্বাস্থ্য দপ্তর।
এদিকে, কেষ্টপুর এলাকায় বেসরকারি হাসপাতালের এক নার্সের শরীরে করোনা উপসর্গ দেখা দেওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করা হলো। ওই নার্সের ২৫ জন সহকর্মীকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। কেষ্টপুরের নোনাপুকুর এলাকার একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন বেসরকারি হাসপাতালের কয়েকজন নার্স। তাঁরা প্রত্যেকেই বিধাননগরের দক্ষিণ থানা এলাকায় অবস্থিত ওই বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। রবিবার রাতে তাঁদের একজনের শরীরে করোনা আক্রান্ত হওয়ার লক্ষ্মণ দেখতে পাওয়া যায়। তার রুমমেটরা দ্রুত বিষয়টি জানায় সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। রাতেই ওই নার্সকে তার ওই বাড়ি থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর সঙ্গে থাকা অন্যদেরও কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকেরই সোয়াব টেস্ট করানো হবে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে।
এই ঘটনার পরেই সোমবার সকালে বাগুইআটি থানার পুলিশ ওই গোটা এলাকাকে সিল করে দিয়েছে। ওই পাড়ায় প্রবেশ করার সবক’টি রাস্তার মুখেই বসিয়ে দেওয়া হয়েছে গার্ডরেল। এদিন সকালেই স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের অন্যতম মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু এবং রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তাদের যৌথ উদ্যোগে এবং স্থানীয় কাউন্সিলরের উদ্যোগে ওই এলাকাতে জীবানুনাশক ছড়ানোর কাজ করা হয়। এলাকার প্রতিটি বাড়ির বাইরের অংশ এবং গোটা রাস্তা জীবাণুনাশক দিয়ে ধুইয়ে দেওয়া হয়। এদিকে এই ঘটনায় এবার বিধাননগর পুর এলাকাতে ‘সংক্রামক এলাকা’ও (Containment Zone) বাড়ল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.