গোবিন্দ রায়: আদালত অবমাননার নোটিস পেতেই ৭ চাকরিপ্রার্থীর নিয়োগপত্র তুলে দিল স্কুল সার্ভিস কমিশন বা SSC। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা, বিচারপতি শেখর ববি সরাফ, বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায় এবং বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস ঘুরে ৬ বছরের মাথায় অবশেষে বৃহস্পতিবার চাকরি পেলেন তাঁরা। রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশনের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল, সেটা মেনে নিতে তাদের সময় লাগল দীর্ঘ ছয় বছর।
প্রশ্নে ভুল থাকার কথা আদালতে স্বীকার করলেও বঞ্চিতদের নিয়োগপত্র দিচ্ছিল না SSC। পরীক্ষার্থীদের একনম্বর দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, পরীক্ষার্থীরা যাতে প্রাপ্ত নম্বর পাওয়া থেকে বঞ্চিত না হন তা নিশ্চিত করবেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান। তারপরেও অনেকটা সময় কেটে গিয়েছে। এরপর স্কুল সার্ভিস কমিশনের সেক্রেটারির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার নোটিস দিতেই হাতে হাতে মিলল নিয়োগপত্র।
২০১৬ সালে এসএলএসটি (SLST) পরীক্ষার ভিত্তিতে উচ্চ প্রাথমিক,মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের ইতিহাসের শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। ২০১৬ সালের ২৭ নভেম্বর স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে এসএলএসটি পরীক্ষা হয়েছিল। ফলাফল প্রকাশিত হয় ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে। এদিন মামলার শুনানি চলাকালীন শম্পা দেবাংশী এবং সৈকত ভট্টাচার্যের পক্ষের আইনজীবী আশিসকুমার চৌধুরী জানান, ইতিহাস পরীক্ষার মডেল উত্তরপত্র প্রকাশিত হয়, যেখানে প্রশ্ন উত্তর সঠিক দেওয়া ছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে SSC আরও একটি উত্তরপত্র তৈরি করে সেখানে ওই প্রশ্নের উত্তরটি ভুল করে। কিন্তু এটি তাঁরা কোথাও প্রকাশ করেনি তাই মামলাকারীরাও জানতে পারেনি যে তাঁরা সঠিক উত্তর দিয়েও প্রাপ্ত নম্বর পাননি। ২০২১ সালে ২৪ মার্চ মামলাকারীরা জানতে পারেন তাঁরা সঠিক উত্তর দিয়েও এক নম্বর পাননি শুধুমাত্র স্কুল সার্ভিস কমিশনের ভুল উত্তরপত্র তৈরি করার জন্য।
চলতি বছরে মামলাকারীর পক্ষ থেকে স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। তাঁদের দাবি ছিল, স্কুল সার্ভিস কমিশন যদি এক নম্বর দেয় তাহলে তারা মেধাতালিকায় নথিভুক্ত হবেন। নিয়োগপত্রও পাবেন। কিন্তু স্কুল সার্ভিস কমিশন তাঁদের আবেদন গ্রাহ্য করেনি বলে অভিযোগ করে কলকাতা হাই কোর্টের শরণাপন্ন হন।
তিন বিচারপতি অমৃতা সিনহা,শেখর ববি সরাফ এবং বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পৃথকভাবে স্কুল সার্ভিস কমিশনের সেক্রেটারিকে নির্দেশ দেন উত্তরপত্র যাচাই করে মামলাকারীদের জানাতে হবে এবং যদি মামলাকারীদের এক নম্বর বাড়ে তাহলে আইনঅনুগ ব্যবস্থা নেবেন। এরপরই নম্বর বাড়ে তাঁদের। অবশেষে নিয়োগপত্র পেলেন চাকরিপ্রার্থীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.