অর্ণব আইচ: তিন বছর আগেও বাংলাদেশের আল কায়দা (Al-Qaeda) ঘাঁটি তৈরি করেছিল কলকাতায়। তখন কলকাতা পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিল দুই সদস্য-সহ তিনজন। তিন বছর পর ফের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ-র হাতে মুর্শিদাবাদের ৯ জন আল কায়দার সদস্য ধরা পড়ার পর গোয়েন্দাদের প্রশ্ন, পুজোয় কি জঙ্গি সংগঠনের টার্গেট ছিল কলকাতা?
ধৃত আল-কায়দার জঙ্গিরা যে দেশের বড় শহরগুলিতে নাশকতার ছক কষেছিল, সেই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই গোয়েন্দাদের। যেহেতু সামনে পুজো, তাই এই উৎসবের মধ্যে জঙ্গিরা কোনও হামলার ছক কষেছিল কি না, তা তাদের জেরা করে গোয়েন্দারা জানতে চাইছেন। মুর্শিদাবাদের এই জঙ্গিরা গ্রেপ্তার হওয়ার পর সতর্ক হয়েছে কলকাতা পুলিশ ও রাজ্য পুলিশও। লালবাজারের এক কর্তা জানিয়েছেন, যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য পুলিশ তৈরি রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে কলকাতা স্টেশনের কাছ থেকে বাংলাদেশের আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (STF)। এই সংগঠনটি আল কায়েদার ভারতীয় শাখা আকিসের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। বাংলাদেশি ব্লগার ও বুদ্ধিজীবীদের খুনের পিছনে রয়েছে এই সংগঠন। ধৃতদের কাছ থেকে ভুয়া পরিচয়পত্র ছাড়াও উদ্ধার হয়েছিল আল কায়দার বেশ কিছু নথি। দুই জঙ্গি সামশাদ মিয়া ওরফে তুষার বিশ্বাস ও রেজাউল ইসলাম ওরফে রিয়াজ ওরফে সুমন যোগাযোগ করেছিল কলকাতার অস্ত্র সরবরাহকারী মনোতোষ দের সঙ্গে। তখনই জানা গিয়েছিল, এই সংগঠনের জঙ্গিরা কলকাতায় ঘাঁটি তৈরি করেছে। বিশেষ করে উত্তর কলকাতায় একটি ঘর ভাড়া নিয়ে অস্ত্র তৈরি ও মজুতের ছক কষেছিল তারা।
তিন বছর পর মুর্শিদাবাদে আল কায়দার সদস্যদের কাছ থেকে বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জাম ও ধাতুর তৈরি বুলেট প্রুফ জ্যাকেট উদ্ধার হল। পুলিশের ধারণা, তারা বড় কোনও নাশকতার ছক কষেছিল। পুজোর আগে বা পুজোর সময় কলকাতায় কোনও নাশকতার ছক তারা কষেছিল কি না তা জানতে চাইছেন লালবাজারে গোয়েন্দারাও। সেই কারণে মুর্শিদাবাদের ওই জঙ্গিদের জেরা করতে চান তাঁরাও। পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, সাধারণভাবেই পুজোর আগে সতর্ক থাকে পুলিশ। তাই এখন থেকেই মেট্রো রেল, শপিং মলের উপর রয়েছে পুলিশের নজর। এদিকে, যে জঙ্গিরা ধরা পড়েছে, তারা দক্ষিণ ভারত থেকে কলকাতা হয়ে মুর্শিদাবাদে যাতায়াত করত বলে জানা গিয়েছে। কলকাতায় তারা কোনও ঘাঁটি তৈরি করেছিল কি না, তা জানার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.