নব্যেন্দু হাজরা: চলতি বছরেই শহরের রাস্তায় নামতে চলেছে আরও ৫০টি পরিবেশবান্ধব বৈদ্যুতিক বাস। সেগুলি চলবে নিউটাউন, বলাকা এবং শাপুরজি বাস ডিপো থেকে। শহরের বিভিন্ন প্রান্তের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করবে বাসগুলি। বর্তমানে কলকাতায় ৮০টি বৈদ্যুতিক বাস বা ই-বাস চলে। নতুন এই ৫০টি গাড়ি নামলে সংখ্যাটা বেড়ে ১৩০ হবে। গত বছর থেকে শহরে নামা ই-বাস সাধারণ মানুষের মধ্যে খুবই জনপ্রিয় হয়েছে। এমনকি খুব প্রশংসিত হয়েছে বিদেশের দরবারে। তাই পরিবহন ব্যবস্থার পরিকাঠামো উন্নয়নে আরও বেশি সংখ্যক পরিবেশবান্ধব এই বাস নামাতে চাইছে পশ্চিমবঙ্গ পরিবহন নিগম। ইতিমধ্যেই চার্জিং স্টেশনের সংখ্যা বাড়ানো থেকে শুরু করে আধুনিক মানের বাসস্ট্যান্ড তৈরি একগুচ্ছ পদক্ষেপ করা হয়েছে। ফলে এই ধরনের বাস বাড়ালে পরিকাঠামোগত দিক থেকে কোনও সমস্যা হবে না। পাশাপাশি সোলারাইজড বাস ডিপো তৈরি করারও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে পরিবহন দপ্তরের তরফে।
একদিকে শহরের পরিকাঠামো উন্নয়ন, অন্যদিকে বাতাসের দূষণ নিয়ন্ত্রণে বছর খানেক আগে কলকাতায় চালু হয়েছিল ইলেকট্রিক বাস। যা শুরুতেই জনপ্রিয় হয় কলকাতায়। কলকাতার সেই ই-বাস পরিষেবা আন্তর্জাতিক দরবারে স্বীকৃতিও জিতে নেয়। আন্তর্জাতিক বিদ্যুৎ এজেন্সির ২০২০-এর গ্লোবাল ইলেকট্রিক ভেহিকল আউটলুক (জেভো) রিপোর্ট প্রকাশিত হয় প্যারিসে। দেশের একমাত্র শহর হিসাবে কলকাতার ই-বাস পরিষেবা প্রশংসিত হয়েছে ওই রিপোর্টে। চিনের শেনঝেন, ফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কি ও চিলির সান্তিয়াগোর সঙ্গেই চতুর্থ শহর হিসাবে উঠে এসেছে কলকাতা। রিপোর্টে বলা হয়েছে, এক্ষেত্রে বিশ্বের অনেক শহরের কাছেই আদর্শ হয়ে উঠেছে কলকাতা।
পরিবেশ দপ্তর দূত্রের খবর, শহরের পুরোনো বাস-মিনিবাস বায়ুদূষণের একটা বড় উৎস। বিশেষ করে গাড়ির ধোঁয়ার কারণে বাতাসে ভাসমান অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণার মাত্রা অনেকটা বেড়ে যায়। সেই তুলনায় ই-বাসে দূষণের হার অনেকটা কম। পরিবহণ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, আরও ই-বাস প্রাইভেট অপারেটরদের সঙ্গে চুক্তিতে নামবে। এরমধ্যে কলকাতা লাগোয়া নিউটাউন, আসানসোল-দুর্গাপুর, হলদিয়া ও শিলিগুড়িতে গড়ে ৫০টি করে বাস নামতে পারে। তবে সেক্ষেত্রেও যে নির্মাতা সংস্থা বাস চালাবে, তাদের মাসে ন্যূনতম পাঁচ হাজার কিলোমিটার চালাতে হবে, বাসের সিটসহ যাবতীয় কাঠামো ঝকঝকে রাখতে হবে, এমন বেশ কিছু শর্ত মেনে চলতে হবে।
পাশাপাশি রাজ্য বিদ্যুৎদপ্তরও পাঁচটি ইলেকট্রিক গাড়ি (ই-কার) পরীক্ষামূলক ভাবে চালু করল। বিদ্যুৎদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, পেট্রোল-ডিজেলের দাম রোজ বাড়ছে। ফলে গাড়ি চালানোর খরচও বাড়ছে রোজ। সেই সঙ্গে রয়েছে দুষণ। সব দিক মাথায় রেখে ওই দপ্তর ব্যাটারিচালিত গাড়ি পরীক্ষামূলক ভাবে চালু করল। রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, বিদ্যুৎমন্ত্রী-সহ মোট পাঁচ জন এই গাড়িগুলো ব্যবহার করবেন। আপাতত পাঁচ বছরের জন্য লিজ নিয়ে গাড়িগুলো চালানো হচ্ছে বলে বিদ্যুৎদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। শহরে এই গাড়ি চার্জ দেওয়ার জায়গার অভাব রয়েছে, তাই বিদ্যুৎদপ্তরেই আপাতত গাড়িগুলোর চার্জের ব্যবস্থা থাকছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.