Advertisement
Advertisement
Park street

বহুতল থেকে একসঙ্গে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা পাঁচ তরুণীর, চাঞ্চল্য পার্কস্ট্রিটে

কিন্তু কেন?

5 young girls try to jump for suicide from highrise of Park street | Sangbad Pratidin
Published by: Paramita Paul
  • Posted:April 19, 2021 11:07 am
  • Updated:April 19, 2021 11:43 am  

অর্ণব আইচ: পাঁচতলার বারান্দায় হাতে হাত ধরে দাঁড়িয়ে পাঁচ তরুণী। চিৎকার করে তাঁরা বলে চলেছেন, বকেয়া বেতন পাচ্ছেন না। তাই তাঁরা আত্মহত্যা করবেন। পাড়ার লোকেরা বলছেন, বারান্দার ওই বিপজ্জক জায়গায় না দাঁড়িয়ে নেমে আসতে। তরুণীরা বলছেন, তাঁরা কারওর কথা শুনবেন না। বকেয়া টাকা না পেলে উপর থেকে রাস্তায় ঝাঁপ দেবেন। শেষ পর্যন্ত এলাকার বাসিন্দারা ও পুলিশ ছুটে এসে নিরস্ত করলেন তাঁদের।
বহুদিন ধরে বন্ধ সার্কাস। রাজ্যের একটি নামী সার্কাস উঠে যাওয়ার জোগাড়। বেতন দিতে পারছিলেন না মালিক। তাই মালিকের বাড়ির পাঁচতলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে আত্মহত্যার হুমকি সার্কাসের পাঁচ তরুণীর। আর ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে রবিবার হুলস্থূলু পরিস্থিতি পার্ক স্ট্রিট এলাকায়। শেষ পর্যন্ত পার্ক স্ট্রিট থানার পুলিশের হস্তক্ষেপে মিটল সমস্যা।

পুলিশ ও এলাকা সূত্রে জানা গিয়েছে, পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকার স্যান্ডাল স্ট্রিটের একটি পাঁচতলা বাড়িতে থাকেন ওই নামী সার্কাসের মালিক। এর আগে সারা দেশজুড়ে ঘুরত এই সার্কাস। প্রত্যেক বছর শীতকালে কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় আসত এই সার্কাস। বাঘ, সিংহ ও বিভিন্ন জন্তুজানোয়ারের খেলা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে ওই সার্কাসেও ভিড় কম হতে থাকে। তবুও কোনওমতে চলছিল সার্কাসটি। পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, সার্কাসের মালিক কর্মচারীদের বেতন দিচ্ছিলেন। কিন্তু গত বছর লকডাউনের পর থেকে সার্কাসের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। কোভিড পরিস্থিতিতে গত শীতেও বসেনি সার্কাস। সার্কাসের কলাকুশলীরা প্রায় বসেই কাটিয়েছিলেন। তার ফলে মালিক ও কর্মচারীদের আর্থিক অবস্থা তলানিতে গিয়ে ঠেকে।

Advertisement

[আরও পড়ুন : সোদপুরে রাতভর বোমাবাজি, ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে মানিকতলায় ‘আক্রান্ত’ বিজেপি কর্মীর মা-ও]

পুলিশের এক আধিকারিক জানান, এর মধ্যেই কর্মচারীরা শুনতে পান যে, মালিক সার্কাসটি বন্ধ করে দিতে চলেছেন। ছোটবেলা থেকেই ওই সার্কাসে কাজ করতেন তরুণীরা। ওই সার্কাসেই কাজ শিখেছেন। তাঁদের কারও বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর বা বারুইপুরে। আবার কেউ খড়গপুরের বাসিন্দা। তাঁরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে এসে হাজির হন। সেখান থেকে পৌঁছে যান স্যান্ডাল স্ট্রিটে, সার্কাসের মালিকের বাড়িতে। মালিকের সঙ্গে দেখা করে তাঁরা টাকা চান। পুলিশকে ওই তরুণীরা পরে জানান, তাঁদের বেতন বকেয়া ছিল। তাঁরা টাকা চাইতে গেলে তাঁদের পুরো টাকা দেওয়া হয়নি। তাঁদের চলে যেতে বলা হয়। এর পরই তাঁরা বাড়ির একটি বারান্দায় চলে আসেন। বারান্দায় হাতে হাত ধরে দাঁড়ান পাঁচজন। চিৎকার করে বলতে থাকেন, তাঁরা বেতন পাচ্ছেন না। তাঁরা সবাই খুব অভাবের মধ্যে রয়েছেন। তাই বকেয়া টাকা না পেলে তাঁদের বেঁচে থেকে লাভ নেই। তাঁরা নিচে লাফ দিয়ে আত্মহত্যার হুমকি দিতে থাকেন।

[আরও পড়ুন : হাসপাতালে ভরতি কয়লা পাচারচক্রের অন্যতম পাণ্ডা বিকাশ মিশ্র]

পাঁচ তরুণীকে ওভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আঁতকে ওঠেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁরা তরুণীদের নেমে আসতে বলেন। কিন্তু তাঁরা নামতে নারাজ। কয়েকজন বাসিন্দা উঠে যান পাঁচতলার ঘর লাগোয়া বারান্দাটিতে। এর মধ্যেই এলাকার বাসিন্দারা পার্ক স্ট্রিট থানায় পুরো ঘটনাটি জানান। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। শেষ পর্যন্ত প্রত্যেকের অনুরোধে তাঁরা ওই বিপজ্জনক জায়গাটি থেকে বেরিয়ে আসেন। পুলিশ আধিকারিকরা সার্কাসের মালিকের সঙ্গে কথা বলেন। পুলিশের হস্তক্ষেপে সমস্যা মেটে। বকেয়া বেতন তরুণীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তাঁরা বাড়ি ফিরে গিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement