ছবি: প্রতীকী
অর্ণব আইচ: কলকাতার (Kolkata) একটি নামী মঠের সন্ন্যাসীদের ৮৫ কোটি টাকা দানের নাম করে তাঁদের থেকে ৯০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ। এই ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। অর্পিতা ঘোষ নামে এক মহিলা এই জালিয়াতির কিংপিন। এ ছাড়াও তাঁর গাড়ির চালক থেকে শুরু করে কয়েকজন মহিলা কর্মীও ঘটনায় সঙ্গে জড়িত বলে জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত পাঁচজনকে ব্যাংকশাল আদালতে তোলা হলে তাঁদের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতার একটি নামী মঠের সন্ন্যাসীদের সঙ্গে অনলাইনে যোগাযোগ করে অর্পিতা ঘোষ নামের ওই মহিলা। নিজেকে আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দিয়ে জানান, দক্ষিণ আফ্রিকায় তিনি ও তাঁর পরিবারের লোকেরা থাকেন। এই মঠকে তিনি ৮৫ কোটি টাকা দান করতে চান। অনলাইনে পাওয়া এই প্রস্তাবে রাজি হন সন্ন্যাসীরা। সূত্রের খবর, এরপর ওই মহিলা তাঁদের বলেন, বিদেশ থেকে ওই টাকা পাঠানোর জন্য কিছু পদ্ধতি রয়েছে। কিছু প্রসেসিং ফিও লাগে। তা দেখিয়েই অর্পিতা সন্ন্যাসীদের কাছ থেকে টাকা চান। সরল বিশ্বাসে মঠের সন্ন্যাসীরা অনলাইনে বিশেষ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠান। ৮৫ কোটি টাকা দান করার লোভ দেখিয়ে টাকা চাইতে শুরু করেন অর্পিতা। জানা গিয়েছে, এর জন্য অভিযুক্ত মহিলা বেশ কিছু সরকারি দপ্তর ও কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তির লেটারহেড ও স্টাম্প জাল করেন। গোয়েন্দাদের কাছে খবর, এমনভাবে এই চক্রটি সন্ন্যাসীদের বুঝিয়েছিল যেন, বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অর্পিতা ও তাঁর চক্রের অন্যদের খুবই পরিচিত। ফলে ৮৫ কোটি টাকা দানের জন্য প্রসেসিং ফি হিসাবে টাকা পাঠানোর বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে এই চক্রটি।
অভিযোগ, এভাবে বেশ কয়েক দফায় ৯০ লক্ষ টাকা অনলাইনে হাতিয়ে নেয় এই প্রতারণা চক্র। কিন্তু দানের টাকা পাঠানোর কোনও নামগন্ধ পাওয়া যায় না। এদিকে অভিযুক্ত মহিলা আরও টাকা চেয়ে বসেন। এতে সন্দেহ হয় ওই মঠের সন্ন্যাসীদের। সন্ন্যাসীরা ওই বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে চান যে, তাঁরা অর্পিতা বা অন্যদের চেনেন কি না। কিন্তু তাঁদের কাছ থেকে কোনও সদুত্তর না পেয়ে সন্ন্যাসীদের সন্দেহ হয়। ওই মঠের তরফ থেকে লালবাজারের সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত শুরু করে নিশ্চিত হয় যে,বিদেশের নাম করে করা হলেও এই জালিয়াতি হচ্ছে কলকাতায় বসেই। সেই মতো দক্ষিণ কলকাতার একটি বাড়িতে চলে তল্লাশি। অর্পিতা ঘোষকে গ্রেপ্তার করার পর উদ্ধার হয় বহু জাল নথিপত্র ও স্ট্যাম্প।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.