ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: রাজ্যে অ্যাডিনো ভাইরাসের করাল থাবা। তার মাঝে নিউমোনিয়ার দাপট। ক্রমশ বাড়ছে সংক্রমিত এবং মৃতের সংখ্যা। মঙ্গলবার সকালে কলকাতার হাসপাতালে ফের প্রাণ গেল পাঁচ খুদের। তিনজন ভরতি ছিল বি সি রায় হাসপাতালে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাবে আরও দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের দাবি, এক শিশু অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত ছিল। তবে হাসপাতাল সূত্রে খবর, প্রত্যেকের নিউমোনিয়া হয়েছিল।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাবে নিহত শিশুদের মধ্যে একজন মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা। ছ’মাস বয়সি ওই শিশু অ্যাডিনো ভাইরাস সংক্রমিত বলেই দাবি পরিবারের। সে কারণে তাকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছিল। পরিবার সূত্রে খবর, প্রথমে আরজি করে ভরতি ছিল ওই শিশুটি। সুস্থ হয়ে যায়। সে কারণে ছেড়েও দেওয়া হয় তাকে। তবে বাড়ি ফিরে যাওয়ার পর আবার অসুস্থ হয়ে পড়ে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভরতি করা হয়। মঙ্গলবার সকাল আটটা নাগাদ ওই শিশুর মৃত্যু হয়।
অন্যদিকে, হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের ১ বছর ৮ মাস বয়সি শিশু জ্বর, শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। গায়ে র্যাশও দেখা দিয়েছিল। ওই শিশুটিকে উদয়নারায়ণপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রথমে ভরতি করা হয়। সেখান থেকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় তাকে। এদিন সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ মৃত্যু হয় ওই শিশুর। বি সি রায়ে হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে মোট তিনজন শিশুর। তাদের মধ্যে একজন নদিয়ার হরিণঘাটার বাসিন্দা। সে মাত্র দু’মাস বয়সি।
এই নিয়ে তিনদিনে মোট ১০টি শিশুর মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই বাড়ছে উদ্বেগ। পরিস্থিতি সামাল দিতে তৎপর রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর। রাজ্যের সব হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নতির উপর জোর দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, অসুস্থ বাচ্চাদের চাপ সামাল দিতে বাঙুরের পর বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ৫০টি শয্যা শিশুদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যদপ্তরের নির্দেশিকা অনুযায়ী, কোনও হাসপাতালে যেন অক্সিজেনের অভাব না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পেডিয়াট্রিক ও নিওনেটাল বিশেষজ্ঞদের প্রয়োজন ছাড়া ছুটি নেওয়া যাবে না। কেউ ছুটি নিলে তার বদলে কে থাকবেন তা এমএসভিপি বা সমমর্যাদার আধিকারিককে জানাতে হবে। জ্বর-তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে কোনও শিশু আসলেই যেন সঙ্গে সঙ্গে ভরতি করা হয়। জেলা থেকে রেফার কমাতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.