নব্যেন্দু হাজরা: আবাস যোজনায় (Awas Yojona) দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে রাজ্যে আসছে আরও পাঁচ কেন্দ্রীয় দল। ১০টি জেলায় দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে চায় এই পাঁচটি দল। রাজ্যের পঞ্চায়েত দপ্তরকে চিঠি দিয়ে কেন্দ্রীয় দলগুলিকে সহযোগিতা করার বার্তা দিয়েছে মোদি (Narendra Modi) সরকার। সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি বিডিও থেকে শুরু করে পঞ্চায়েতের আধিকারিক, সবার সঙ্গে কথা বলবে এই দলগুলি।
গত সপ্তাহেই রাজ্যের দুই জেলায় আবাসে দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে এসেছিল কেন্দ্রীয় দল। দুই জেলাতেই দফায় দফায় বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তাদের। সেই দুই কেন্দ্রীয় দল ফিরে যাওয়ার পরই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) একপ্রকার হুঁশিয়ারির সুরে বলেছিলেন, আগামী এক সপ্তাহে রাজ্যে আসবে আরও ১৫টি দল। শুভেন্দুর সেই হুঁশিয়ারির পরই কেন্দ্রের দল পাঠানোর সিদ্ধান্তের নেপথ্যে কেন্দ্রের রাজনৈতিক অভিসন্ধি আছে বলে আশঙ্কা করছে শাসক শিবির।
এমনিতেই আবাস নিয়ে রাজ্যকে রীতিমতো বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করেছে কেন্দ্র। অন্যান্য রাজ্যে সেখানে এপ্রিল-মে মাসের মধ্যেই বাড়ি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা দিয়ে দিয়েছিল, সেখানে বাংলাকে সেই লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে ২০২২ সালের একেবারে শেষের দিকে। আবার টার্গেট বেঁধে দেওয়া হয়েছে, সব বাড়ি তৈরির কাজ সারতে হবে মার্চ মাসের মধ্যে। রাজ্য সরকার কার্যত যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় ১১ লক্ষ বাড়ি প্রাপকের তালিকা তৈরি করে কেন্দ্রের কাছে পাঠিয়েছে। হিসাবমতো ৭ জানুয়ারির মধ্যেই সেই ১১ লক্ষ মানুষের বাড়ি তৈরির প্রথম কিস্তির টাকা চলে আসার কথা। অথচ, এ মাসের ১৪ তারিখেও সেই টাকা এসে পৌছায়নি। এর মধ্যে একবার কেন্দ্রীয় দল এসে দুই জেলায় ঘুরেও গিয়েছে। রাজ্যের ধারণা ছিল ওই কেন্দ্রীয় দলের পর্যবেক্ষণের পর অন্তত প্রথম কিস্তির টাকা দেবে কেন্দ্র। কিন্তু সেটা না পাঠিয়ে উলটে ফের দল পাঠানো হচ্ছে।
কেন্দ্র জানিয়েছে, বঙ্গের কয়েকটি জেলায় ফের ‘গরমিলে’র অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। সেটাই খতিয়ে দেখতে আসছে ‘ন্যাশনাল লেভেল মনিটর্স’ (SLM) টিম পাঠানো হচ্ছে। প্রশাসনিক মহলের ধারণা, এই দল ঘুরে না যাওয়া পর্যন্ত কেন্দ্র প্রথম কিস্তির টাকা দেবে না। আর যেভাবে বিরোধী দলনেতার হুঁশিয়ারির পর কেন্দ্রীয় দল আসছে তাতে মনগড়া গরমিল বের করে সেই টাকা আটকে দেওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না নবান্ন। আবাস যোজনার ৬০ শতাংশ টাকা কেন্দ্র দেয়, রাজ্য দেয় ৪০ শতাংশ। রাজ্য নিজেদের মতো প্রস্তুত অথচ কেন্দ্র টাকা না পাঠিয়ে, পাঠাচ্ছে দল। তাতে ক্ষোভ এবং আশঙ্কা দুটোই বাড়ছে রাজ্যের শাসক শিবিরে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.