ভুয়ো ন্যাশনাল সেভিংস সার্টিফিকেট ও কিষাণ বিকাশপত্র ব্যাংকে জমা দেয় ধৃতরা।
অর্ণব আইচ: মুদিখানার দোকান সাজিয়ে তৈরি করা হবে ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। তার জন্য ব্যাংক থেকে চাই ঋণ। সেই ঋণ নেওয়ার নামে ভুয়া ন্যাশনাল সেভিংস সার্টিফিকেট জমা দিয়ে ৪০ লক্ষ টাকার ব্যাংক জালিয়াতি। এই অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করলেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রচুর সংখ্যক ভুয়ো ন্যাশনাল সেভিংস সার্টিফিকেট ও কিষাণ বিকাশপত্র। গোয়েন্দাদের ধারণা, জালিয়াতি চক্রের পিছনে কোন ব্যাংক কর্মী অথবা ডাক বিভাগের কর্মীর থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম প্রশান্ত মণ্ডল, নবকুমার মিথিয়া, প্রদীপ চক্রবর্তী ও কৌশিক রায়চৌধুরী। গত ২০১৮ সালে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের জওহরলাল নেহেরু রোডের শাখায় যায় চার অভিযুক্ত। মুদির দোকান আধুনিক করার নাম করে তারা ৬০টি ন্যাশনাল সেভিংস সার্টিফিকেট জমা দেয়। প্রত্যেকটির মূল্য এক লক্ষ টাকা। ওই শংসাপত্রের বদলে মোট ৪০ লক্ষ টাকা ঋণ নেয় তারা। কিন্তু প্রায় বছরখানেক কেটে যাওয়ার পরও ঋণের টাকা মেটায়নি তারা। এর মধ্যে বদলি হয়ে নতুন ব্যাংক ম্যানেজার ওই শাখায় আসেন। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ খোঁজখবর নিতে শুরু করে। ম্যানেজারের প্রচেষ্টায় ওই শংসাপত্রগুলি যাচাই ও পরীক্ষা করা হয়। তখনই দেখা যায় যে, সেগুলি জাল। অথচ যখন এই শংসাপত্রগুলি যাচাই করা হয়েছিল তখন সেগুলি আসল বলেই রিপোর্ট এসেছিল ব্যাংকের কাছে। ফলে এর পিছনে জালিয়াতি চক্র রয়েছে সেই বিষয়ে নিঃসন্দেহ হন ব্যাংক আধিকারিকরা।
ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে শেক্সপিয়র সরণি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। তদন্ত শুরু করেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। প্রথমে ফলতা থেকে প্রশান্ত মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার নামেই নেওয়া হয়েছিল ঋণ। এর পর কলকাতা ও দমদম থেকে ধরা পড়ে বাকিরা। তাদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ন্যাশনাল সেভিংস সার্টিফিকেট উদ্ধার হয় যার মূল্য ১০ হাজার টাকা করে। এছাড়া উদ্ধার হয় কিষাণ বিকাশপত্র যার একেকটির মূল্য ৫০ হাজার টাকা। এগুলি দেখিয়ে ফের নতুনভাবে অন্য একটি ব্যাংকে জালিয়াতি করার ছক কষেছিল এই চক্রটি। ধৃতদের জেরা করে এই চক্রের অন্য মাথাদের ধরার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.