ছবি: প্রতীকী
নিরুফা খাতুন: রিজেন্ট পার্কে বাবা মা ও মেয়ের আত্মহত্যায় দড়ি নিয়ে দানা বাঁধছে রহস্য। তিনজনই নতুন সাদা রঙের নাইলনের দড়ি দিয়ে গলায় ঝুলছিলেন। তাহলে তিনজনই পরিকল্পনা করে আত্মহত্যা করেছিলেন? নাকি মেয়ের আত্মহত্যার কথা জানতে পেরে বাবা মা আত্মহত্যা করেন? উঠছে প্রশ্ন। কারণ ডাইনিং হলে টেবিলে খাবার সাজানো ছিল। যদি তিনজনের একসঙ্গে আত্মহত্যার পরিকল্পনা থাকত, সেক্ষেত্রে তো খাবার থাকার কথা নয়।
রিজেন্ট পার্কে গঙ্গাপুরী প্রাইমারি স্কুলের ঠিক বিপরীতে একটি আবাসনে বিজয় চট্টোপাধ্যায়, স্ত্রী রাণু চট্টোপাধ্যায় ও মেয়ের ঐন্দ্রিলা চট্টোপাধ্যায়ের পচাগলা ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। ঐন্দ্রিলার দেহ ঝুলছিল তাঁর ঘরে সিলিং ফ্যানের হুকে। ডাইনিংয়ে সিলিং ফ্যানের হুকে ঝুলন্ত অবস্থার উদ্ধার হয় বাবা-মার দেহ। তিনজনই নতুন সাদা রঙের নাইলনের দড়ি গলায় দিয়ে ঝুলছিলেন। পুলিশ দরজা ভেঙে যখন ফ্ল্যাটে ঢোকেন তখন দেখেন ডাইনিং হলে টেবিলের ওপর খাবার সাজানো রয়েছে। সেখানে সিলিং ফ্যানের জন্য দুটি আলাদা হুক ছিল। সেই হুকে বাবা ও মা নতুন সাদা নাইলনের দড়ি গলায় দিয়ে ঝুলছিলেন। দেহ পচন ধরে গিয়েছিল। টেবিলে থাকা খাবারগুলিতেও ছত্রাক ধরেছিল। মেয়ের ঘর ভিতর দিয়ে বন্ধ ছিল। ঘরের দরজা ভেঙে দেখেন মেয়ে ঘরের সিলিং ফ্যানের হুকিংয়ে ঠিক একই দড়িতে ঝুলছিলেন। পাশে সিলিং ফ্যানটি খোলা ছিল। মেয়েরও দেহে পচন ধরে গিয়েছিল।
পুলিশের অনুমান বাবা, মা ও মেয়ে তিনজন একই দিনে আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু হঠাৎ এরকম কেন সিদ্ধান্ত নিতে গেল তাঁরা? আর্থিক সংকট নাকি বাবা-মা ও মেয়ের মধ্যে কোনও ঝামেলা থেকে এরকম চুড়ান্ত পদক্ষেপ নিয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। প্রতিবেশী সূত্রে খবর, প্রায় চারমাস হবে এলাকায় থাকলেও প্রতিবেশীদের সঙ্গে তাঁরা মিশতেন না। ফ্ল্যাটের দরজা জানলা সবসময় বন্ধ থাকত। কোনও কাজের লোকও ছিল না বাড়িতে। বিজয়বাবু কী করতেন স্থানীয়রা কেউ কিছু জানতেন না। বিজয়বাবু বিকেলে একবার করে হাঁটতে বের হতেন। কিন্তু তাঁর স্ত্রী একদমই নীচে নামতেন না। মেয়ে মাঝেসাজে কলেজ যেতেন। বেশিরভাগ সময় ঘরেই থাকতেন। মেয়ের ঘরের জানলা সব সময় বন্ধ থাকত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.