অর্ণব আইচ: ধ্বংসস্তূপের মধ্যে থেকে উদ্ধার আরও একজনের মৃতদেহ। এনিয়ে মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো তিন। বুধবার গভীর রাতে উদ্ধার হওয়া দেহটি গৌতম মণ্ডলের। তিনি মেট্রোর ঠিকাকর্মীদের রান্নার দায়িত্বে ছিলেন। বাড়ি মুর্শিদাবাদের লালবাগে। দেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য এসএসকেএমে পাঠানো হয়েছে। এদিকে বিপর্যয়ের ৩৬ ঘণ্টা পর উদ্ধারকাজে ইতি টেনে দিল জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। বাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও কোনও দেহ আটকে নেই। তাই গোটা বাহিনীই ফিরে যাচ্ছে।
জানা গিয়েছে, বুধবার রাতেই ধ্বংসস্তূপের মধ্যে থেকে দু’নম্বর মৃতদেহটি উদ্ধার হয়েছিল। মৃত ব্যক্তির নাম প্রণব দে। তিনি মেট্রোর নির্মাণ শ্রমিক। বাড়ি মুর্শিদাবাদের পোড়াডাঙায়। অন্যিদেক, মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয় নিয়ে এদিন নবান্নে জরুরি বৈঠকে বসতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই মাঝেরহাট সেতুর নতুন ভবিষ্যতের রূপরেখা পাওয়া যাবে। বিকেল ৩.৩০ মিনিটে নবান্নে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পিডব্লিউডি, কেএমডিএ, সেচদপ্তর ও পুলিশকর্তারা। পূর্তসচিবের কাছে ১৩ দিনের মধ্যে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। পূর্তসচিব চিফ ইঞ্জিনিয়ারের কাছে সেই রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন। এদিকে সেতুর পুরনো নকশা, নথির কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না। এখনও পর্যন্ত তদন্ত রিপোর্ট বলছে, লালফিতের ফাঁসেই আটকে গিয়েছে মাঝেরহাট সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ।
গত মঙ্গলবার বিকেল চারটের কাছাকাছি সময়ে আচমকাই ভেঙে পড়ে মাঝেরহাট সেতুর একাংশ। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে মৃত্যু হয় বেহালার শীলপাড়ার যুবক সৌমেন বাগের। এসএসকেএম হাসপাতালে ছেলের দেহ শনাক্ত করেন অভিভাবকরা। দুর্ঘটনাস্থলে সেনার সঙ্গে জোরকদমে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছিল জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। বুধবার রাতে দ্বিতীয় জনের দেহ উদ্ধার হয়। তৃতীয় জনের দেহ উদ্ধার হল গভীর রাতে। এদিকে সেতু বিপর্যয়ের জেরে কার্যত বিচ্ছিন্ন দ্বীপের চেহারা নিয়েছে বেহালা। মাঝেরহাট, ব্রেসব্রিজ, তারাতলা সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। ভোর চারটে থেকে দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে যানজট শুরু হয়েছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে ট্রাফিকের বড়কর্তারা পথে নেমেছেন। দ্বিতীয় হুগলি সেতু এড়িয়ে হাওড়া ব্রিজ দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন ট্রাফিকের কর্তারা। সবমিলিয়ে যানজটে জেরবার গোটা কলকাতা। বেহালাগামী গাড়ি হাইডরোড-হেস্টিংস হয়ে যাচ্ছে। সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছাতে নিত্যযাত্রীরা ভোরবেলা বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন। তাতেও নাভিশ্বাস উঠেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.