স্টাফ রিপোর্টার: আর একটু দেরি হলেই ‘ধাপ্পা’ দিয়ে পালিয়ে যেতেন প্রতারকরা৷ কিন্তু স্রেফ ধৈর্যের বাঁধ ভাঙল বলেই ধরা পড়ে গেলেন পুলিশের হাতে৷ প্রায় ১৭ কোটি টাকা হাতিয়ে শেষে গ্রেফতার রাসবিহারীর সেনকো জুয়েলারি প্যালেস আভূষণের তিন কর্তা৷ কিন্তু পুলিশের হাতে ধরা পড়ার মুখে কর্তাদের করুণ পরিণতির কথা শুনে মনে পড়ে যাবে ছেলেবেলার চোর-পুলিশ খেলার কথা৷
পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে পরিচারক-পরিচারিকাদের স্বর্ণপ্রকল্পের কর্তারা বলেছিলেন, তাঁরা বাড়ির কাবার্ড অর্থাৎ, বড় আলমারির ভিতর লুকিয়ে থাকবেন৷ পুলিশ খুঁজতে এলে বলতে হবে ‘বাবু বাড়ি নেই’৷ পরিচারিকারা মুর্খামি না করলেও, ধৈর্যের পরীক্ষায় ডাহা ফেল করে গেলেন কর্তারা৷ দীর্ঘক্ষণ অস্বস্তির জেরে উসখুস করতে করতে ভুলবশত কিছু আওয়াজ করে ফেলেন বাক্সের ভিতরে বসেই৷ ততক্ষণে বাড়িরই এক সূত্র খানিকটা ইঙ্গিত দিয়ে ফেলেছেন পুলিশকে৷ দুইয়ে মিলে শেষে ধরাই পড়ে গেলেন স্বর্ণপ্রকল্পের প্রতারণাচক্রের ওই তিন ব্যক্তি৷ আলমারির ভেঙে উদ্ধার করা হল অনিরুদ্ধ সেন, অনির্বাণ সেন ও অর্জুন সেনদের৷
পুলিশ জানাচ্ছে, অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই জমা পড়ছিল৷ টালিগঞ্জ থানার রাসবিহারীর সেনকো জুয়েলারি প্যালেস আভূষণ নামে একটি সোনার দোকানে ‘ধনবৃদ্ধি ও স্বর্ণতৃষা’ প্রকল্পের নামে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই টাকা জমাচ্ছিলেন গ্রাহকরা৷ গত চার বছর ধরে চলছিল এই ব্যবসা৷ বলা হয়েছিল, প্রকল্পে টাকা জমিয়ে তা ম্যাচিওর করলে হয় মিলবে টাকা নতুবা মিলবে সোনা৷ এই পরিস্থিতিতে ভুল হয় নামে৷ গ্রাহকরা ভাবেন সেনকো গোল্ড অ্যান্ড জুয়েলারির কথা৷ নামের সেই ভুল ভাঙতেই গ্রাহকরা সতর্ক হন৷ অভিযোগ, ম্যাচিওরিটি ভ্যালু হিসাবে যা বলা হয়েছিল মিলছিল না তার কোনওটিই৷ ব্যবসায়ীদের কাছে জিজ্ঞাসা করলে, কোনও গুরুত্বই দিচ্ছিলেন না তাঁরা৷ পুলিশ জানায়, ততক্ষণে ওই তিন কর্তা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় ১৭ কোটি টাকার মতো বড় অংশের গ্রাহকপুঁজি৷ শেষে যাদবপুরের বিজয়গড়ের বাসিন্দা কৃষ্ণেন্দু বসুর একটি অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার রাতে নিউ আলিপুরের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় ওই ব্যবসায়ীদের৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.