অর্ণব আইচ ও সুদীপ রায়চৌধুরি: কলকাতার একটি হোটেলে বসে বাঘের ছাল ( tiger skin) বিক্রি করা হচ্ছিল। ক্রেতা সেজে সেই হোটেলের ঘরে দরদাম করতে গিয়ে দুই পাচারকারীকে ধরলেন বনদপ্তরের আধিকারিকরা। পরে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া ওই বাঘের ছাল ৬ লাখ টাকায় বিক্রির চেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার হলেন অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তিও।
বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত অনিন্দ্য গড়িয়াহাটের বাসিন্দা। আর বাকি দুই পাচারকারী হচ্ছে কসবার তারক হালদার ও উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের ইব্রাহিম মণ্ডল। গত কয়েকদিন ধরে বনদপ্তরের বন্যপ্রাণ শাখার আধিকারিকরা খবর পাচ্ছিলেন, দক্ষিণ কলকাতায় বাঘের ছাল বিক্রি করার চেষ্টা করছে দুই পাচারকারী। সেইমতো আধিকারিকরা ক্রেতা সেজে তারকের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফাঁদ পাতেন। ছালটির প্রাথমিক দরদামও হয়। শেষ পর্যন্ত ৬ লাখ টাকায় রফা হয়।
সেই কথা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটে নাগাদ ক্রেতা সেজে যান বন দপ্তরের আধিকারিক শুভঙ্কর বাগচি, পৃথ্বীশ ঘোষ, সুজয় সরকার, দিলীপ প্রসাদ। বাইপাসের কাছে পঞ্চান্নগ্রাম এলাকার একটি হোটেলের ঘরে বাঘের ছাল নিয়ে অপেক্ষা করছিল তারক ও তার সঙ্গী ইব্রাহিম। ছালটি কেমন তা দেখার অছিলায় গিয়ে সেটিকে বাজেয়াপ্ত করেন বন দপ্তরের আধিকারিকরা। তারক ও ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। জেরার মুখে তারা স্বীকার করে, গড়িয়াহাটের ব্যবসায়ী অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায় ওই বাঘ ছালের মালিক। তিনি সেটি পেয়েছিলেন উত্তরাধিকার সূত্রে। টাকার প্রয়োজন থাকায় সেটি বিক্রির ছক কষেন।
যদিও বন দপ্তরের এক আধিকারিক জানান, উত্তরাধিকার সূত্রে কারও কাছে বাঘের ছাল থাকলে তিনি তা সাজিয়ে রাখতে পারেন। কিন্তু, তা বিক্রি করা বা উপহার দেওয়া বেআইনি। অনিন্দ্য সেটি বিক্রি করার জন্য কসবা এলাকার দাগী অপরাধী বলে পরিচিত তারকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁর প্রস্তাবে তারক রাজি হয়ে খদ্দের খুঁজছিল। তারকের কথার ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গড়িয়াহাটের বাড়ি থেকেই অনিন্দ্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। ছালটি কতটা পুরনো বা আদৌ পুরনো কি না, সেই বিষয়ে নিশ্চিত হতে বনদপ্তরের আধিকারিকরা সেটি বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠাচ্ছেন। ধৃতদের জেরা করে আর কেউ জড়িত আছে কি না তাও জানার চেষ্টা চলছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.