ছবি: প্রতীকী।
অর্ণব আইচ: বেহালার পর্ণশ্রীতে মা-ছেলে খুনের (Pranasree Murder Case) ঘটনার রহস্যভেদ হল এক সপ্তাহের মধ্যেই।পুলিশের জালে মৃতা সুস্মিতা মণ্ডলের দুই মাসতুতো দাদা। কলকাতা পুলিশের জয়েন্ট সিপি ক্রাইম মুরলীধর শর্মা জানিয়েছেন, শনিবার রাতভর জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছে মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় দাস। আগামিকাল ধৃতদের তোলা হবে আদালতে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মহেশতলা থানা এলাকার শ্যামপুর ঘোষপাড়ার বাসিন্দা সঞ্জয় ও সন্দীপ দাস। সম্পর্কে তারা দুইভাই। মৃতা সুস্মিতা মণ্ডল ছিলেন সঞ্জয় ও সন্দীপের মাসতুতো বোন। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, তদন্ত শুরুর পর থেকেই সঞ্জয়ের ভূমিকা ভাবাচ্ছিল তাঁদের। পরবর্তীতে শনিবার রাতে বাড়ি থেকে আটক করা হয় তাকে। লালবাজারে টানা জিজ্ঞাসাবাদ চলে। মুরলীধর শর্মা জানিয়েছেন, রাত দুটো নাগাদ খুনের কথা স্বীকার করে নেয় সঞ্জয়। সেই সময়ই গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। ভোর ৪ টে নাগাদ গ্রেপ্তার করা হয় সঞ্জয়ের ভাই সন্দীপকে।
কী কারণে ও কীভাবে খুন? পুলিশের দাবি ধৃত সঞ্জয় জানিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই আর্থিক সমস্যায় ভুগছিল সে। প্রচুর ধার হয়ে গিয়েছিল। কোনওভাবেই সমস্যার সুরাহা করতে পারছিল না সে। এদিকে মাসতুতো বোন সুস্মিতার অবস্থা অনেকটাই স্বচ্ছল। বরাবরই সোনার গয়নার প্রতি আকর্ষণ ছিল তাঁর। সেই কথা ভেবেই বোনকে খুনের ষড়যন্ত্র করে সঞ্জয়।
জানা গিয়েছে, পরিকল্পনা মাফিক ৬ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ সোমবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ বোন সুস্মিতার বাড়িতে যায় সঞ্জয় ও সন্দীপ। কারণ, তারা জানত ওই সময় সুস্মিতাদেবীর স্বামী বাড়িতে থাকেন না। দাদাদের দেখে স্বাভাবিকভাবেই আনন্দিত হন ওই মহিলা। সেই সময় পাশের ঘরে অনলাইন ক্লাস করছিল তাঁর ছেলে তমোজিৎ। যাতে এঘরের গল্পের কারণে ছেলের পড়াশোনার ক্ষতি না হয় সেই কারণে সুস্মিতাদেবী পাশের ঘরের দরজাও বন্ধ করে দিয়েছিলেন। সেই সময়ই বোনকে খুন করে সঞ্জয় ও সন্দীপ। তা দেখে ফেলেছিল বছর তেরোর তমোজিৎ। সেই কারণেই খুন করা হয় তাকেও। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, সোমবারই আদালতে তোলা হবে ধৃতদের।
উল্লেখ্য, পর্ণশ্রীর সেনপল্লি এলাকার গোপাল মিশ্র রোডের বহুতল ফ্ল্যাট থেকে গত সোমবার রাতে উদ্ধার হয় সুস্মিতা মণ্ডল ও তার ছেলে তমোজিতের দেহ। শোয়ার ঘরে সুস্মিতাদেবীর দেহ পড়ে ছিল। তমোজিতের দেহ ছিল তার পাশের ঘরে। তার পরনে ছিল স্কুলের পোশাক।ঘটনার তদন্তে নেমেই মহিলার স্বামী-সহ বেশ কয়েকজনকে আটক করেছিল পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.