কলহার মুখোপাধ্যায়: রাগের মাথায় নয়, বরং রীতিমতো ছক কষে কৈখালির সিভিক পুলিশকর্মী শম্পা দাসকে খুনের ছক কষেছিল তাঁর স্বামী সুপ্রতীম। মঙ্গলবার সকালে বিমানবন্দর লাগোয়া মাইকেলনগর থেকে নীরজ সাউ ও হাফিজুল মোল্লা নামে দু’জন সুপারি কিলারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, আংশিক পঙ্গু সুপ্রতীমকে ফিজিওথেরাপি করতে আসতেন রশিদ নামে এক ব্যক্তি। তাঁর মাধ্যমেই নীরজ ও হাফিজুলের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল মৃতার স্বামীর। লেকটাউনে ক্লক ভাড়াটে খুনিদের সঙ্গে আলোচনা করে স্ত্রীকে খুনের ছক কষে সুপ্রতীম। ধৃতদের জেরার এমনই এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে। নীরজ সাউ ও হাফিজুল মোল্লাকে ৮ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে বারাকপুর মহকুমা আদালত।
[জাতীয় সড়কে চলন্ত লরিতে অগ্নিকাণ্ড, পুড়ল লক্ষাধিক টাকার পাট]
গত শুক্রবার নৃশংসভাবে খুন হন কলকাতা বিধাননগর কমিশনারেটের সিভিক ভলানটিয়ার শম্পা দাস। বাড়ি থেকে তাঁর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শরীরের কোথাও কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না। তবে মুখটি বিকৃত হয়ে গিয়েছিল। মৃতের স্বামীর সুপ্রতীম দাস দাবি ছিল, স্ত্রী অফিস থেকে ফেরার পরই বাড়িতে ঢোকে পড়ে তিন-চারজনের দুষ্কৃতীদল। তাঁকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে দুষ্কৃতীরা। বাঁধা দিতে গেলে, সুপ্রতীমের স্ত্রী শম্পাকে পিটিয়ে মেরে ফেলে তারা। কিন্তি, সুপ্রতীম দাসের বক্তব্যকে গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়নি এয়ারপোর্ট থানার পুলিশের। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। শেষপর্যন্ত, স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে সুপ্রতিম দাসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তদন্তে জানা যায়, সম্পত্তির লোভে সুপারি কিলারকে দিয়ে সিভিক ভলানটিয়ার স্ত্রীকে খুন করিয়েছে সুপ্রতীম। সে নিজে সুপারি কিলারদের খুনের বরাত দিয়েছিল। তদন্তকারীদের দাবি, ঘটনার দিন ফোন করে স্ত্রী শম্পাকে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে বলেন সুপ্রতীম। স্বামীর ফোন পেয়ে ইকো পার্কে কর্মরতা সিভিক ভলানটিয়ার শম্পা দাস প্রায় ঘণ্টা খানেক আগে বাড়ি ফিরেও এসেছিলেন। এদিকে আবার ওই দম্পতির শিশুপুত্র ও বাড়ির পরিচারিকাকে তরমুজ কিনতে বাগুইআটিতে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন সুপ্রতীমে্র মা। ফলে কার্যত ফাঁকা বাড়িতে শম্পাকে খুন করে চম্পট দেয় ভাড়াটে খুনিরা। রাতে বাড়ি ফিরে শম্পাদেবীর রক্তাক্ত দেহটি প্রথম দেখতে পান বাড়ির পরিচারিকাই।
[‘তুচ্ছ’ কারণে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রকে বেধড়ক মার শিক্ষকের, জ্ঞান হারাল পড়ুয়া]
মঙ্গলবার বিমানবন্দর লাগোয়া মাইকেলনগর থেকে নীরজ সাউ ও হাফিজুল মোল্লা নামে দু’জন সুপারি কিলারকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। জানা গিয়েছে, ঘণ্টা ছয়েকের লাগাতার জেরায় ভেঙে পড়ে হাফিজুল। সে পুলিশকে জানিয়েছে, শম্পা দাসকে খুন করার জন্য তাঁর স্বামী সুপ্রতীমের কাছে প্রথমে ১ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়েছিল। শেষপর্যন্ত রফা হয় ৬০ হাজার টাকায়। যদিও সেই টাকাও পুরোটা দিতে পারেনি ওই মহিলা সিভিক ভলানটিয়ারের স্বামী। ভাড়াটে খুনীদের ৫৯ হাজার টাকা দিয়েছিল সে। হাফিজুল জানিয়েছে, সুপ্রতীম বলেছিল, পরিকল্পনামতো খুনের পর যখন সুপারি কিলাররা ঘরে লুটপাঠ চালাবে, তখন আলমারি থেক কিছু গয়না মিলতে পারে। এদিকে সোমবার ধৃতদের বারাকপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়। ৮ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
ছবি: আকাশনীল ভট্টাচার্য
[লাইসেন্স ছাড়াই চলছে হোটেল-রেস্তরাঁ, বালুরঘাট পুরসভার বিরুদ্ধে ক্ষোভ আধিকারিকদের]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.