Advertisement
Advertisement

Breaking News

এবার কলকাতায় মিলল বস্তা ভর্তি ছেঁড়া ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট

গল্ফগ্রিনে জঞ্জালের মধ্যে মিলল প্রায় ২ বস্তা ছেঁড়া নোট৷

Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:November 13, 2016 10:04 am
  • Updated:November 13, 2016 10:15 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছুটির রবিবারে শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ, সমস্ত ব্যাঙ্কে টাকার খোঁজে ‘আম-আদমির’ লম্বা লাইন পড়েছে৷ দুর্ভোগের পঞ্চম দিনেও ব্যাঙ্ক বা এটিএমের সামনে নগদ টাকার জন্য সাধারণ মানুষের হাহাকার বিন্দুমাত্র কমেনি৷ এর মধ্যেই এদিন গল্ফগ্রিনে জঞ্জালের মধ্যে খোঁজ মিলল প্রায় ২ বস্তা ছেঁড়া নোটের৷ ইতিমধ্যেই পুলিশ এসে ওই টাকার নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়েছে৷ ঘটনায় ইতিমধ্যেই তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে৷ এর আগে দেশের নানা প্রান্তে বাতিল ৫০০ ও ১০০ টাকার পোড়া নোট মিললেও এ রাজ্যে এমন নজির সম্ভবত এই প্রথম৷

 টালিগঞ্জে গল্ফ ক্লাব রোডের পাশের একটি জঞ্জালের স্তূপে ফেলে রাখা একাধিক বস্তার ভিতর থেকে মিলেছে ছেঁড়া নোটগুলি৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, ওই টাকা আসল৷ আয়কর দফতরের কাছে ধরা পড়ার ভয়ে কোনও অসাধু ব্যক্তি ওই টাকা ফেলে গিয়েছে বলে অনুমান স্থানীয়দের৷ টাকাগুলি রীতিমতো যত্ন করে টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলে দিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে যাদবপুর থানার পুলিশ৷ টাকাগুলি আসল না নকল, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷

Advertisement

অন্যদিকে, আজ ভোরের আলো ফুটতেই যাদবপুর থেকে বেলেঘাটা, বড়বাজার থেকে বালিগঞ্জ ‘লড়কে লেঙ্গে পাকিস্তান’ মেজাজে রয়েছেন সকলে৷ এটিএমে ভরসা নেই, তাই লাইন ব্যাঙ্কের সামনে সর্পিল ভঙ্গিতে এগিয়েছে৷ এত ভোরেও যে এরকম লাইন পড়তে পারে, আন্দাজ করে উঠতে পারেননি অনেকে৷ যেমন বেসরকারি সংস্থার কর্মী সুদেষ্ণা রায়৷ ফি রবিবার বাড়ির লোকেদের জন্য ভালো-মন্দ রান্না করেন৷ “এই রোববার নো রান্না৷ সকাল থেকে ব্যাঙ্কে লাইন দেব৷ অফিস ছিল বলে এই কদিন টাকা তুলতে সময় পাইনি৷ রবিবার যে করেই হোক…৷” দৃঢ়প্রতিজ্ঞ সুদেষ্ণার মতো অনেকেই৷ কোমরে গামছা থুড়ি চেকবই বেঁধে তাঁরা নেমে পড়েছেন রবিবারের যুদ্ধে৷ যুদ্ধ? “যুদ্ধই তো৷ এর আগে একদিন দু’ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ফিরে যেতে হয়েছে৷ আজ টাকা নিয়েই বাড়ি ঢুকব৷ জানিয়েছেন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মী প্রিয়ব্রত সরকার৷

গতকালই সবার মোবাইলে চলে এসেছে মোক্ষম এসএমএস৷ “অল আওয়ার ব্রাঞ্চস আর ওপেন দিস সানডে৷” সারা সপ্তাহ অফিস করে ব্যাঙ্কে লাইন দিতে পারেননি অনেকে৷ এটিএম মেশিন কার্যত বুধবার থেকেই আউট অফ ক্যাশ৷ ফলে কার্ড সোয়াইপ করেও মেলেনি কিছু৷ অন্যান্য রবিবারের মতো এ রবিবারে আরাম করলে তাই ‘হারাম’ হতে পারে৷ লক্ষ্মীর ঘট ভেঙে যে খুচরো বেরিয়েছিল চারদিনে তা নিঃশেষ৷ জমাদারের টাকা, গ্যাসের বিল ইলেকট্রিকের বিল দিয়ে পার্সে সামান্য কয়েকটা খুচরোর ঝনঝন৷ সোমবার বাজারে যেতে গেলে যে রেস্ত দরকার তার খোঁজেই আজ অভিযানে নামল বং-ব্রিগেড৷ সেই মতো শনিবার রাতেই টাকা তোলার ব্লু-প্রিণ্ট তৈরি করে ফেলেন অনেকে৷ গুগল ম্যাপ খুলে দেখে নিয়েছেন নিজের নিজের ব্যাঙ্কের ‘নিয়ারেস্ট ব্রাঞ্চ৷’ বাড়ির খুদে সদস্যদের শিখিয়ে পড়িয়ে নিয়েছেন৷ “এতক্ষণ সময় রিলে করে তো দাঁড়াতে হবে৷” মুচকি হেসেছেন অনেকে৷

ভোর হতে চাট্টি মুখে দিয়েই তাই লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েছেন অনেকে৷ মঙ্গলবার আচমকা রাতে পাঁচশো, হাজার বাতিল ঘোষণার পর থেকেই মাছি তাড়াচ্ছে বেশিরভাগ বাজার৷ হাতে গোনা কয়েকটি দোকানে পুরনো নোট নিলেও বেশিরভাগ দোকানি মুখ বেঁকাচ্ছেন৷ পাশের বাড়িতে চিনি দিয়ে বিনিময়ে আটা নিয়ে রুটি সেঁকেছে মধ্যবিত্ত৷ কোথাও বা দোকানে বাধ্য হয়েই খুলতে হয়েছে খাতা৷ সরকারি, বেসরকারি কর্মচারীরা এই কাদা থেকে উঠতে তাকিয়ে রয়েছেন আজকের দিনটির দিকেই৷ ছুটির রবিবারে তাই কোনও আড্ডায় নয়, বাঙালির খোঁজ মিলবে ব্যাঙ্কেই৷ কারণ, আজ রবিবার, টাকা তোলার ‘বড়দিন’!

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement