কৃষ্ণ কুমার দাস: বেলেঘাটা আইডিতে (Beleghtata ID) ডিউটি করতে গিয়ে মাত্র ২৪ ঘণ্টায় ১৩ জুনিয়র ডাক্তারকে করোনা ভাইরাসে সংক্রামিত সন্দেহে শুক্রবারই কোয়ারেন্টাইনে পাঠিয়ে দিল স্বাস্থ্যভবন। এই ইন্টার্নদের আটজন নীলরতন সরকার মেডিক্যাল (NRS) কলেজ ও পাঁচজন সাগরদত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের। কোভিড-১৯ (COVID-19) ভাইরাসে সংক্রমিত সন্দেহে ১৩ জনেরই গলার লালারস ইতিমধ্যে পরীক্ষা হয়েছে। কিন্তু এখনও তাদের রিপোর্ট আসেনি।
প্রথমে রাজি না থাকলেও স্বাস্থ্যভবন ও জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠনের প্রবল চাপে পড়ে এদিনই আটজনের লালারস টেস্ট করতে পাঠায় আইডি। কিন্তু এই ১৩ জনের কোয়ারেন্টাইনে যাওয়া ও করোনা পরীক্ষা নিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে রীতিমতো হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে ইন্টার্নদের অভিভাবকদের অভিযোগ। বেলেঘাটা আইডিতে করোনা রোগীর ওয়ার্ডে ডিউটি করা আরও এক চিকিৎসকের লালারস পরীক্ষা হয়েছে। একের পর এক জুনিয়র ডাক্তার করোনা সংক্রামক সন্দেহে ডিউটি ছেড়ে কোয়ারেন্টাইনে চলে যাওয়ায় পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে গিয়ে সংকটে পড়ছেন আইডি কর্তৃপক্ষ। দিনের পর দিন জুনিয়র ডাক্তারদের মেডিক্যাল টেস্ট না করানো এবং কোয়ারেন্টাইনে না পাঠানো নিয়ে ইন্টার্নদের মধ্যে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে তা এদিন কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা। নবান্নে তিনি জানান, “ওয়েস্ট বেঙ্গল ডাক্তার ফোরামের সঙ্গেও কথা বলেছি। জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গেও যোগাযোগ করব। নার্সদের সঙ্গেও কথা হবে। কারও সমস্যা যেন না থাকে সেটা রাজ্য দেখবে।”
[আরও পড়ুন:জীবাণুনাশক শরীরে ঢুকিয়ে করোনা বধ, ট্রাম্পের আজব দাওয়াইয়ে হতবাক দুনিয়া]
অন্যদিকে বেলেঘাটা আইডির পাশাপাশি এদিন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের এক শিক্ষক-চিকিৎসকেরও করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে। তিনি মেডিসিন বিভাগে কর্মরত। বেহালার এক স্থানীয় চিকিৎসকও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোরের এক করোনা আক্রান্ত আধিকারিকের চিকিৎসা করে সংক্রমিত হন বেহালার এই চিকিৎসক। এবার বেহালার ওই চিকিৎসকের সংস্পর্শে কারা এসেছেন তার তালিকা তৈরি করছে স্বাস্থ্য দফতর। জুনিয়র ডাক্তাররা গত দু’দিন কাদের সঙ্গে মিশেছেন তারও তালিকা চাইছে স্বাস্থ্যভবন। তবে এই ঘটনায় নীলরতনের সুপার ও অধ্যক্ষের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেছেন স্বাস্থ্যভবনের শীর্ষকর্তারা। কারণ, জুনিয়র ডাক্তাররা চাইলেও ওই দুই আধিকারিক করোনা পরীক্ষা করাননি। পাশাপাশি ইন্টার্নদেরও কোয়ারেন্টাইনে যেতে দেননি। লালারস পরীক্ষার পর জুনিয়র ডাক্তারদের কোয়ারেন্টাইনে না পাঠিয়ে কেন নীলরতনের হস্টেলে রাখা হয় তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ইন্টার্নদের অভিভাবকরা। এমনকি এই ইন্টার্নরা যদি সংক্রমিত হন তাহলে তাঁদের সঙ্গে থাকা হস্টেলের বাকি পড়ুয়াদেরও সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন অভিভবকরা। এক্ষেত্র প্রশ্ন উঠেছে, নীলরতনের অধ্যক্ষের উদাসীনতা নিয়ে। সংক্রমিত হওয়ার প্রশ্ন ঘুরছে নীলরতন ও সাগর দত্তের হস্টেলের অন্দরে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.