নিজস্ব সংবাদদাতা, হুগলি: হুগলি স্টেশন ও ব্যান্ডেল স্টেশনের মাঝে ব্রিটিশ আমলের একটি পরিত্যক্ত প্ল্যার্টফর্মের পাশের ঝোপ থেকে উদ্ধার হল এক কিশোরের রক্তাক্ত মৃতদেহ৷ মৃতের নাম সৌম্যজিৎ দাস (১১)৷ ঘটনার তদন্তে নেমেছে চুঁচুড়া থানার পুলিশ৷
প্রাথমিক তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় চিপস কিনতে বের হয় ওই কিশোর৷ তারপর থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় সে৷ পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করলেও তদন্তকারীদের ধারণা এটি খুনের ঘটনা৷ কারণ ওই কিশোরকে বাইরে থেকে ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে সেই চিহ্ন স্পষ্ট৷ একই সঙ্গে নাক দিয়ে রক্ত বেরনোর ফলে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়ে থাকতে পারে বলেও মনে করছেন তদন্তকারীরা৷ সেক্ষেত্রে প্রথমে শ্বাসরোধ করে পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করার সম্ভাবনাই প্রবল বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা৷
হুগলির বাঁশবেড়িয়ার বাসিন্দা সৌম্যজিৎ৷ তবে তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে কিশোর সৌম্যজিৎ দাস বেশ কিছুদিন ধরে ব্যান্ডেলের মানসপুরে লালবাবা আশ্রমে দিদিমার সঙ্গে থাকত৷ বছর তিনেক আগে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় সৌম্যজিতের বাবা বিশ্বজিৎ দাস ও সোমা দাসের মধ্যে৷ এরপর সোমাদেবী বিয়ে করেন অরবিন্দ তাঁতি নামে এক ব্যক্তিকে৷ তখন থেকেই দিদিমার কাছে থাকতে শুরু করেন ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র সৌম্যজিৎ৷ কিন্তু সম্প্রতি অরবিন্দর সঙ্গে সোমাদেবীর সম্পর্কের অবনতি হয়৷ সোমাদেবী জানিয়েছেন, অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবক কিছুদিন ধরেই তাঁকে উত্যক্ত করছিল৷ যা নিয়ে অরবিন্দ সন্দেহ করায় পারিবারিক অশান্তি বাড়তে থাকে৷ এই ঘটনার জেরেই দু’দিন আগে মানসপুরে মায়ের কাছে চলে আসেন সোমাদেবী৷ এরপর বিষয়টি মিটমাট করার জন্য সেখানে আসেন অরবিন্দ৷
অভিযোগ, সৌম্যজিৎ যখন শুক্রবার সন্ধ্যায় চিপস কিনতে বেরিয়ে ছিল তখন তাঁর পিছন পিছন বেড়িয়েছিলেন অরবিন্দও৷ কিন্তু কিছুক্ষণ পরই তিনি ফিরে এসে জানান সৌম্যজিৎকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না৷ এরপরই খোঁজ শুরু হয়৷ কিন্তু রাতভর খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান মেলেনি সৌম্যজিতের৷ অবশেষে শনিবার সকালে রেল লাইন ধরে হেঁটে আসার সময় নিত্যযাত্রীরা ওই বালকের দেহ পড়ে থাকতে দেখেন পরিত্যক্ত ওই প্ল্যাটফর্মের ধারের জঙ্গলে৷ পারিবারিক বিবাদ মিটিয়ে নেওয়ার বিষয়টি শেষ অবধি কী হয়েছে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি অরবিন্দ বা সোমা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.