ফাইল ফটো
কলহার মুখোপাধ্যায়: ইদের দিন দিল্লি ফেরত তবলিঘি জামাতিদের জন্য বিরিয়ানির ব্যবস্থা করল রাজারহাট হজ হাউস কর্তৃপক্ষ। ছাদে নমাজ পড়লেন তাঁরা। সঙ্গে ছিল জমিয়ে পেটপুজোর ব্যবস্থাও। বিরিয়ানি, সেমাই, লাচ্চা-সহ মুরগির মাংসের নানা পদ ইদের দিন রান্না হল। শতাধিক বিদেশির জন্য এই ব্যবস্থা করেছিল রাজ্য সরকার। বলাই বাহুল্য, এদিনের আয়োজন ফুরফুরে মেজাজ ফিরিয়ে দিয়েছে দীর্ঘদিন অন্য দেশে আটকে থাকা তবলিঘি জামাতের সদস্যদের।
সোমবার ইদের দিন রাজারহাটের মদিনাতুল হুজ্জাজ হজ হাউসের ছাদে নমাজ পড়লেন আটকে পড়া ১ কেরালিয়ান-সহ ১০৮ জন বিদেশি। এঁদের মধ্যে মালয়েশিয়ার ৯ জন রয়েছেন। ইন্দোনেশিয়ার ৩৪ জন, থাইল্যান্ডের ২১ জন, মায়ানমারের ২৪ জন এবং বাংলাদেশের ১৮ জন এখানে থাকছেন। এছাড়া কেরল রাজ্যের এক বাসিন্দা হজ হাউসে রয়েছেন। এখানে প্রতিদিন রোজা রেখেছেন তাঁরা। কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে তাঁদের জন্য সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তাঁরা বাড়ি থেকে এরই মাঝখানে টাকা আনিয়েছেন। রাজারহাট হজ হাউস এর অদূরে একটি ব্যাংকে লেনদেন করেছেন। ইদের নামাজ পড়েছেন একসঙ্গে। ওই সেন্টারের কার্যনির্বাহী আধিকারিক মোহাম্মদ নকি জানান, “অতিথিদের কোনও সমস্যা হয়নি। আমাদের তরফে যতটা সাহায্য প্রয়োজন করা হয়েছে।” উল্লেখ্য এই সেন্টারে যে বিদেশিরা রয়েছেন তাদের কোয়ারান্টিন পর্ব শেষ হলেও কূটনৈতিক কারণে এবং নিয়মিত বিমান চলাচল শুরু না হওয়ায় এখানে আটকে রয়েছেন। স্থানীয় কোনও মসজিদে ইদের নমাজ পড়া যায় কিনা সেই ব্যবস্থা করতে আবেদন জানিয়েছিলেন বিদেশিরা। কিন্তু সরকারিভাবে কোয়ারেন্টাইনে থাকা কাউকে এভাবে বাইরে কোনও জমায়েতে যোগদানের অনুমতি দেওয়া যায় না। ফলে তাঁরা হজ হাউসের ছাদেই ইদের নমাজ পড়েন।
এদিন এদের প্রত্যেকের শরীরে ছিল নতুন জামা। রাজ্য সরকারের তরফে নিয়মিত বিদেশিদের জন্য পোশাক সরবরাহ করা হত। এর পাশাপাশি ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা তুলে নিজেরাও ইদের পোশাক কিনিয়ে আনিয়েছেন। এদিন নামাজের আগে নয়া জামাকাপড় পড়েন প্রায় প্রত্যেকেই। এর পাশাপাশি সেন্টারের ভুরিভোজের বাইরেও নিজেদের পছন্দমত কিছু খাবার তাঁরা আনিয়েছেন। অবশ্য রোজা রাখার সময় বিদেশিরা নিজের-নিজের খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখতে প্রায় রোজই বাইরে থেকে পছন্দমত কিছু খাবার আনাতেন। সরকারের তরফ থেকে ইফতারে তাঁদের শরবত, খেজুর, আপেল, আঙ্গুর, তরমুজ, পেঁপে, ছোলা ইত্যাদি দেওয়া হত। সেহরিতে থাকতো পছন্দমত ভাত বা রুটি। রাতে প্রত্যেকদিনই মুরগি ,মাছ কিংবা ডিম ইচ্ছেমতো বেছে নিতেন বিদেশিরা।
কোয়ারেন্টাইন সেন্টার শুরুর পর বহু মানুষকে এখানে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছিল। বিদেশিদের সঙ্গে ছিলেন বীরভূম, বাঁকুড়া, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দারাও। কোয়ারেন্টাইন মেয়াদ কাটিয়ে তারা নিজেদের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন খেপে খেপে। তবে এখনও আটকে রয়েছেন অন্য দেশের এই মানুষগুলি। সূত্রের খবর শীঘ্রই বিমানে তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে। প্রসঙ্গত, মায়ানমারের ২৪ জন মঙ্গলবারই বাসে করে গয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছেন। সেখান থেকে আন্তর্জাতিক বিমানে মায়ানমার ফিরে যাবেন তাঁরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.