Advertisement
Advertisement

Breaking News

corona virus

ধাপায় কোভিড দেহ পৌঁছতে লাগছে ১০ হাজার টাকা! অস্থিভস্ম পেতেও বিপুল খরচ

চাঞ্চল্যকর অভিযোগ জমা পড়ল পুরসভায়।

10 thousand for cremating corona victims at Dhapa, major scam unearthed in Kolkata | SangbadPratidin

ফাইল ছবি

Published by: Sulaya Singha
  • Posted:April 24, 2021 2:55 pm
  • Updated:April 24, 2021 3:06 pm  

কৃষ্ণকুমার দাস: করোনার চিকিৎসায় লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয়ের পরও প্রিয়জন মারা গেলে দাহপর্বের জন্যও অন্তত নগদ হাজার পঁচিশ গুছিয়ে রাখুন। কলকাতা পুরসভার বৈদ্যুতিক চুল্লিতে কোভিড দেহ সৎকারে গিয়ে শুক্রবার পুরসভার শীর্ষকর্তাদের কাছে এমনই ভয়ংকর দুর্নীতির অভিযোগ করলেন স্বজনহারারা।

হাসপাতাল থেকে ধাপায় করোনার (Corona Virus) দেহ নিয়ে যেতে খরচ পড়ছে দশ হাজার টাকা। গণহারে একসঙ্গে তিন দেহ না পুড়িয়ে, এককভাবে পুড়িয়ে মুখাগ্নি পর্ব সম্পূর্ণ করতেও মোটা টাকা লাগছে। বাবার দেহ সৎকারে গিয়ে এমন অর্থপিশাচদের হাতে পড়ার অভিজ্ঞতার কথা বাঁশদ্রোণীর বাসিন্দা মিলি মিত্র সোম লিখিতভাবে জানিয়েছেন পুরসভার স্বাস্থ্য দপ্তরের শীর্ষ অফিসারকে। অভিযোগের প্রতিলিপি খোদ পুর কমিশনার বিনোদ কুমারের কাছেও পৌঁছে গিয়েছে।

Advertisement

কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, ধাপায় দাহর আড়ালে দৈনিক লক্ষ লক্ষ টাকা বেআইনি রোজগার নিয়ে তদন্ত শুরু হলেও রাত পর্যন্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত অভিযুক্ত পুরকর্মী, স্বেচ্ছাসেবী শববাহী গাড়ির চালক ও খালাসিদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। পুরসভার শীর্ষ অফিসারদের একাংশের দাবি, লোকচক্ষুর সামনে দিনের পর দিন স্বজনহারাদের ‘ব্ল্যাকমেল’ করে এমন দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছে যারা, তাদের মাথায় নিশ্চয়ই প্রভাবশালীদের হাত আছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের এক সিনিয়র কর্তার যুক্তি, বিভাগীয় অফিসারদের একাংশ এই চক্রে না থাকলে শুধুমাত্র ডোম বা চুক্তিভিত্তিক কর্মীরা প্রতিটি দেহ সৎকারেই এমনভাবে মুঠো মুঠো টাকা তুলতে পারে না।

[আরও পড়ুন: নিরপেক্ষ ভোটের আবেদন, নির্বাচন শেষে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছেন মমতা]

বাঁশদ্রোণীর আশিস মিত্র (৮৪) মূত্রনালির সংক্রমণ নিয়ে গড়িয়া পঞ্চসায়রের কাছে বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি হন। সাতদিন পরে ‘সুস্থ’ অবস্থায় বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। ঘরে গিয়ে পরিজনরা দেখেন, রোগীকে অক্সিজেন ও নেবুলাইজার দেওয়ার পর ছাড়া হয়েছে। এরপরই রোগীর রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ৭৫-এ নামে। বৃদ্ধের মেয়ে মিলির অভিযোগ, করোনা আক্রান্ত সন্দেহ করেই ডাক্তার দায় এড়াতে ছেড়ে দিয়েছেন। ফের ওই হাসপাতালে নিয়ে গেলে বেড নেই বলে এমার্জেন্সিতেই ফেলে রাখা হয়। বাধ্য হয়ে বেহালার ছোট নার্সিংহোমে নিয়ে ভরতি করার পরদিনই তিনি মারা যান। পুরসভার স্বাস্থ্যকর্তার কাছে মিলির অভিযোগ, এরপর দেহ ধাপায় নিয়ে যাওয়ার জন্য দশ হাজার টাকা নার্সিংহোমেই নেয় শববাহী গাড়ি। এরপর ধাপায় (Dhapa, Kolkata) ঢুকতে দেওয়ার জন্য তিন হাজার টাকা নেয় দায়িত্বে থাকা পুরকর্মীরাই।

পিতৃহারা মেয়ের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, “চোখের সামনে দেখছিলাম, দু-তিনটি দেহ একসঙ্গে চুল্লিতে পোড়ানো হচ্ছে। কিন্তু আমি আমার বাবার দেহ এককভাবে দাহ করতে চাইলাম। নাহলে তো বুঝতে পারব না, অস্থিভস্ম কার কোনটি। সঙ্গে সঙ্গে চার হাজার টাকা দাবি করল। অবশ্য এর সঙ্গে বাবার মুখাগ্নি করার জন্য আলাদা টাকা দাবি করেনি।” অন্যদের অনেক বেশি টাকা লাগলেও মাত্র সতেরো হাজারে মিটিয়ে ঘণ্টা আট বাদে রাতেই ফিরতে পেরেছেন বলে জানান মিলি।

যদিও শববাহী গাড়ি ভাড়া মাত্র পাঁচ হাজার ছাড়া কোথাও এক টাকা লাগার কথা নয়। এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ নিয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় কর্তা যাঁকে কমিশনার অভিযোগ জানাতে বলেন, তাঁকে বারবার ফোন করলেও উত্তর দেননি। দু’দিন আগে হাসপাতাল থেকে দেহ ধাপায় পৌঁছে দিতে কেন পাঁচ হাজার টাকা শববাহী গাড়ি নেবে তা নিয়ে পর্যালোচনা হয়। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক পুরকর্তার ব্যাখ্যা, “নির্বাচন কমিশন প্রশাসকদের সরিয়ে দিতেই পুরসভা অভিভাবকহীন। কর্মীদের একাংশ প্রকাশ্যেই লুঠতরাজ চালাচ্ছে, দেখার কেউ নেই।”

এদিকে হাসপাতালে ভরতি হওয়া কোভিড রোগীদের জন্য নয়া নির্দেশিকা জারি করা হল। এখন থেকে কোনও করোনা রোগীকে অন্য হাসপাতালে রেফার করার পর যদি সেখানে পৌঁছনোর আগেই তাঁর মৃত্যু হয়, তবে আগের হাসপাতালকেই ডেথ সার্টিফিকেট দিতে হবে। এদিকে এতদিন কোনও পরিবারের ব্যক্তিগত চিকিৎসক কোভিড রোগীর ডেথ সার্টিফিকেট দিতে পারতেন না। এবার সেই অনুমতি দেওয়া হল।

[আরও পড়ুন: করোনা আতঙ্কে মেলা বন্ধের আবেদন, প্রতিবাদে পুলিশ কর্মীদের দিকে ছোঁড়া হল পাথর]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement