ফাইল ছবি
স্টাফ রিপোর্টার: মাত্র তিন সপ্তাহের ব্যবধানে দুই মেডিক্যাল পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু। এমন ঘটনা কীভাবে রোধ করা যায় তা নিয়ে মঙ্গলবার স্বাস্থ্যকর্তারা আলোচনায় বসেন। আলোচনায় যোগ দেন স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরাও। উদ্দেশ্য একটাই, মেডিক্যাল পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি।
সোমবার ন্যাশনাল মেডিক্যালের প্রদীপ্তা দাসের মৃত্যুর ঘটনায় অত্যন্ত বিচলিত স্বাস্থ্যভবন। রাজ্যের সবক’টি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ও মনোরোগ বিভাগের প্রধান চিকিৎসকদের সঙ্গে এদিন ভারচুয়াল বৈঠক করেন স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুহৃতা পাল এবং রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য। কেননা, অভ্যন্তরীণ একটি সমীক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয় দেখেছে, প্রায় ১০% ডাক্তারি পড়ুয়াই কমবেশি অবসাদের শিকার। সুহৃতার কথায়, ‘‘সন্তানসম পড়ুয়াদের এই পরিণতি মেনে নিতে পারছি না। মনে হচ্ছে, আমরা কি তা হলে হেরে যাচ্ছি! তাই ওদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকটি সুরক্ষিত করতে ইতিমধ্যেই প্রশিক্ষণ শুরু করেছি। সেটিকেই আরও জোরদার করা হচ্ছে।’’
স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, অবসাদের লক্ষণ সহজ উপায় চেনাতে আগেই ‘গেট কিপার’ প্রশিক্ষণ চালু করা হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল, শিক্ষক, পড়ুয়া ও সহপাঠীরা যেন সহজে বুঝতে পারেন অবসাদগ্রস্তকে। সেই প্রশিক্ষণ আরও সম্প্রসারিত করতে এখন বদ্ধপরিকর বিশ্ববিদ্যালয়। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে জেরবার পড়ুয়াদের মন হালকা করার জন্য ইতিমধ্যেই জানুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে হেল্পলাইন নম্বর দেওয়া শুরু হয়েছে, যাতে মনের কোনও সমস্যা হলে সেই নম্বরে কথা বলতে পারেন অবসাদগ্রস্ত পড়ুয়া। পাশাপাশি গুগল ফর্মের মাধ্যমে একটি সমীক্ষাও করা হয় ডাক্তারি ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে। হাজার ছ’য়েক পড়ুয়া সেই সাইকোমেট্রিক ফর্ম পূরণও করেছিলেন। সেই সব ফর্ম বিশ্লেষণ করেই দেখা গিয়েছে, প্রায় ১০% পড়ুয়া মৃদু থেকে মাঝারি মাপের হতাশা কিংবা অবসাদের শিকার। কারও কারও মানসিক অসুখের মাত্রা অনেকটাই বেশি। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানোও হয় স্বাস্থ্যভবনকে। তার পরই ‘গেট কিপার’ কর্মসূচি চালু হয়।
স্বাস্থ্য সূত্রের খবর, করোনা পর্বে আমজনতার জন্য যে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছিল, সেটি শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটেই নয়, সব মেডিক্যাল কলেজের ওয়েবসাইটেও নম্বর দেখা যাবে। ওয়েবসাইটের পাশাপাশি কলেজের বিভিন্ন জায়গাতেও সেই হেল্পলাইন নম্বর লেখা বোর্ড টাঙানোর কথা বলা হয় অধ্যক্ষদের। স্বাস্থ্য দপ্তর আগামী দিনে উচ্চ-শিক্ষা দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে এই ‘গেট কিপার’ কর্মসূচি রাজ্যের সব কলেজে চালু করার কথাও যে ভাবছে, সে কথাও উঠে আসে এদিনের বৈঠকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.