ছবি: প্রতীকী
দিপালী সেন: জিনসের কোমরের অংশের ভিতর সেলাই করে আটকানো সোনার মলম (Gold Paste)। বাজারে যার আনুমানিক মূল্য ৬৬ লক্ষ টাকা। বুধবার কলকাতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এই বিরাট অঙ্কের সোনা পাচার রুখে দিল শুল্ক দপ্তরের কর্মীরা। আটক করা হয়েছে চারজনকে।
পোশাকের ভিতর লুকিয়ে কিংবা গোপনাঙ্গে আটকে সোনা পাচার এখন ‘ব্যাক ডেটেড’। কাস্টমসের কর্মীরা হাতেনাতে ধরে ফেলছে পাচারকারীদের কায়দা-কানুন। তাই নিত্যনতুন পদ্ধতিতে সোনা পাচারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। এবার যেমন শুল্ক দপ্তরের চোখে ধুলে দিতে ‘সোনার মলম’ তৈরি করে ফেলেছে তারা। তাও আবার পোশাকে সেলাই করে রাখা অংশে এমন ভাবে আটকে রাখছেন যে বুঝে ওঠাই দুষ্কর। কিন্তু শুল্ক দপ্তরের আধিকারিকদের চোখ এড়ানো কি এতই সহজ?
জানা গিয়েছে, দুবাই থেকে দুই ব্যক্তি কলকাতায় আসে। তারা বিমানবন্দরে পৌঁছতেই শুরু হয় তল্লাশি। ব্যাগে, শরীরে, পোশাকে সন্দেহজনক কিছুই মেলেনি। এমনকী, মেটাল ডিটেক্টরেও ধরা পড়ছিল না কিছু। তার পরই দিন কয়েক আগের হায়দরাবাদের বিমানবন্দরের কথা মাথায় আসে তল্লাশিকারী আধিকারিকদের। দুই ব্যক্তির পরনের জিনস খোলানো হয়। তার পরই কোমরের যে অংশে সেলাই করা থাকে, তা কেটে ফেলেন আধিকারিকরা। তখনই বেরিয়ে আসে আসল সত্য। দেখা যায়, জিনসের ভিতর রয়েছে ১ কিলো ৬০০ গ্রামের সোনার মলম বা গোল্ড পেস্ট।
On 12.1.22, based on profiling, officers of AIU #KolkataAirportCustoms seized 1.6Kg #Gold paste (₹66L) concealed in cavities of Jeans pants of 2pax coming from Dubai. In a well planned operation 2receivers were also caught from Arrival gate. @cbic_india @PIBKolkata @DDBanglaNews pic.twitter.com/hryqjrZh8P
— Kolkata Customs (@kolkata_customs) January 13, 2022
কী এই সোনার মলম বা গোল্ড পেস্ট? প্রথমে সোনাকে গলিয়ে তার মধ্যে খাদ এবং বিভিন্ন রাসায়নিক মিশিয়ে এই মলম বানানো হয়। সাধারণত এই মলম বিমানবন্দরে ‘মেটাল ডিটেক্টর’ পরীক্ষায় ধরা পড়ে না। পাচারের পর রাসায়নিক এবং খাদ আলাদা করার জন্য প্রথমে ওই পেস্টকে গুড়ো পাউডারে পরিণত করা হয়। তার পর তা থেকে সোনা আলাদা করে নেওয়া হয়।
কলকাতা বিমানবন্দরের এয়ার ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের তরফে জারি করা বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, রাসায়নিক চিকিৎসার মাধ্যমে মাজনের মতো সোনাকে স্বমহিমায় ফেরানোর পর ২৪ ক্যারাটের ১৩৮৬ গ্রাম সোনা পাওয়া যায়। যার মূল্য ৬৬ লক্ষ ৯৬ হাজার ৪০৯ টাকা। আইন মেনে উদ্ধার সোনা বাজেয়াপ্ত করা হয়।
অন্যদিকে, জিজ্ঞাসাবাদের মুখে দুই যাত্রীই জানিয়ে দেয়, লুকিয়ে আনা সোনা যে ব্যক্তির হাতে তুলে দেওয়া সেও বিমানবন্দরের বাইরেই অপেক্ষা করছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে কলকাতা বিমানবন্দরে পাচার করা সোনা নিতে আসা দুই ব্যক্তিকেও আটক করা হয়। চার ব্যক্তিকেই গ্রেপ্তার করার পর বারাসাত কোর্টে তোলা হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.