ছবি: প্রতীকী
অভিরূপ দাস: চিকিৎসার অতিরিক্ত বিল সংক্রান্ত অভিযোগ তো আসেই। এবার রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনে পৌঁছল স্বামী–স্ত্রীর কোন্দলও। তাও আবার কি না ডাক্তার দম্পতির। হ্যাঁ, শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। এমন ঝগড়া কমিশনে আসায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় কমিশনের সদস্যরাও। শেষপর্যন্ত দম্পতিকে বলা হল সমাধান খুঁজতে আদালতে যেতে।
আসলে ডিভোর্সি ওই দম্পতির সাত বছরের ছেলে থাকে স্ত্রী–র কাছে। এদিকে, স্বামী–স্ত্রী দুজনেই পেশায় চিকিৎসক। স্বামী শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, স্ত্রী প্রখ্যাত গাইনোকলজিস্ট। তাঁদের একমাত্র সন্তান সম্প্রতি দক্ষিণ কলকাতার (Kolkata) ইউএন ব্রহ্মচারী স্ট্রিটের একটি বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি ছিল। গন্ডগোলের সূত্রপাত সাত বছরের ছেলেকে দেখতে বাবা হাসপাতালে পৌঁছলে। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁকে বাধা দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কারণ অভিভাবক হিসেবে হাসপাতালের খাতায় মায়ের নামই রয়েছে। মায়ের নির্দেশ ছিল, অন্য কেউ আসলে প্রবেশে বাধা দেওয়ার। হাসপাতালের নিয়ম অনুযায়ী, তাই অন্য লোকের প্রবেশ নিষেধ। অভিযোগ, হাসপাতালের কর্মচারীরা বাধা দিলে পেশায় ডাক্তার হয়েও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ওই চিকিৎসক হাসপাতালের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করেন। ছেলেকে দেখতে না দিলে হাসপাতাল ভাঙচুরের হুমকিও দেন। চিৎকার–চেঁচামেচিতে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পরে ছেলেটিও।
এর মধ্যেই ছেলের মেডিক্যাল রিপোর্ট দেখতে চান ওই চিকিৎসক। কিন্তু সেটাও দেখতে দেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপরই রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের দ্বারস্থ হন তিনি। বলেন, “আমি একজন চিকিৎসক। তাও কেন নিজের ছেলেকে দেখতে পেলাম না? হাতে দেওয়া হল না মেডিক্যাল রিপোর্টও?” বাবার এহেন অভিযোগ পেয়ে স্বাস্থ্য কমিশন চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘আমরা বলেছি উনি যেন কোনও সিভিল কোর্ট কিম্বা ক্রিমিনাল কোর্টে যান। সেখানেই এর বিচার পেতে পারেন। এখানে এই ধরনের অভিযোগের বিচার হয় না।’’
এদিকে, অকারণ ওষুধ, লাগামছাড়া প্যাথলজিক্যাল টেস্টের চার্জ তো ছিলই। এবার কোভিড চিকিৎসার বিলে ধরা হল রোগীর ঘর মোছার চার্জও! অভিযোগের কেন্দ্রে সেই ডিসান হাসপাতাল। যা দেখে চোখ কপালে উঠেছে রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের। অবিলম্বে সেই অতিরিক্ত টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে ষাটোর্ধ্ব রোগীর পরিবারকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.