স্টাফ রিপোর্টার: ‘ক্রশ লেগ ফ্ল্যাপ’ বা দুটো পা এক সঙ্গে জুড়ে রেখে অস্ত্রোপচার করে এক বালিকার পা ফিরিয়ে দিল এসএসকেএম হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগ। চিকিৎসা বিজ্ঞানের বইপত্রে এমন অস্ত্রোপচারের উল্লেখ থাকলেও চট করে কোনও অর্থোপেডিক চিকিৎসক এমন অস্ত্রোপচার করতেই চান না। কিন্তু ষষ্ঠীর রাতে পিজির ট্রমা কেয়ার সেন্টারে এমন অস্ত্রোপচার এই প্রথম। ভরসা জাগাল অন্য চিকিৎসকদেরও।
ব্যাপারটা এইরকম। ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় বাবার সঙ্গে অটো করে বেরিয়েছিল চার বছরের মেয়ে। হঠাৎ মোটর ভ্যানের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে গুরুতর জখম হয় বছর চারেকের হাসি মোল্লা। তার ডান পায়ের গোড়ালির নিচ থেকে পুরোটা কেটে চামড়ার সঙ্গে ঝুলতে থাকে। ওই অবস্থায় মেয়েকে নিয়ে সোজা পিজি হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে। পিজির প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের আইটিইউতে এখন অনেকটাই সুস্থ হাসি। আর কদিন পরে বাড়ি ফিরে যাবে। পিজির অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মুকুল ভট্টাচার্যর কথায়, প্লাস্টিক সার্জারির প্রধান অধ্যাপক ডা.অরিন্দম সরকারের কথায়, ২০ অক্টোবর সন্ধ্যায় বাবার সঙ্গে বেরিয়েছিল। দুর্ঘটনার পর প্রথমে নিমপীঠ হাসপাতাল, পরে বারুইপুর এবং ন্যাশন্যাল মেডিক্যাল কলেজ ঘুরে বাচ্চাটিকে হাসপাতালে আনা হয় রাত এগারোটা নাগাদ। তখনও পায়ের পাতা কোনওরকমে ঝুলে ছিল। দ্রুত চিকিৎসক দল গঠন করা হয়।
এক্স রে করে দেখা যায় পায়ের হাড়, স্নায়ু, ট্যান্ডন (শক্ত ও মোটা তন্তু) সব কেটে দুভাগ। মুকুলবাবুর কথায়, ‘‘রাত দুটো নাগাদ অস্ত্রোপচার শুরু হয়। অর্থোপেডিক বিভাগের চিকিৎসক, ডা. অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়, কিরণময় ঘোষ এবং শুভজিৎ মুখোপাধ্যায় হাড়টি পায়ের সঙ্গে জুড়ে ফেলেন। এর পরে প্লাস্টিক সার্জারির চিকিৎসক কল্যাণ দাস, দীপস্মিতা শর্মা, এবং শর্বরী কুণ্ডুর মতো চিকিৎসকরা একে একে স্নায়ু, ট্যান্ডন এবং ধমনি জুড়ে ফেলেন। এই অস্ত্রোপচারের জন্য ভালো পায়ের থেকে চামড়া কেটে ক্ষত মেরামত করা হয়েছে। অাপাতত অনেকটাই সুস্থ। আর কয়েকদিন পরেই বাড়ি ফিরে যাবে চার বছরের হাসি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.